বরিশালে শ্রমিক নেতা সুমন মোল্লাকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের রুপাতলী এলাকার শ্রমিক নেতা সুমন মোল্লাকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার রাতে রুপাতলী বসুন্ধরা হাউজিংয়ের সম্মুখে অন্তত ১০/১২ জন যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা অস্ত্র দিয়ে সুমন মোল্লাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এই চিত্র দেখে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে সুমন মোল্লাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বরিশাল রুপাতলী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুমন মোল্লাকে মাসখানেক আগেও কুপিয়ে জখম করা হয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার রাতে ফের তিনি নিজের বাসার কাছে হামলার শিকার হলেন।
সুমন মোল্লা অভিযোগ করেছেন, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরে তিনি সেখানে চা খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে ১০/১২ জন লোক তাকে ঘিরে ধরে এবং এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। প্রথমে তাদের প্রতিরোধে উদ্যোগ নিলেও তারা সংখ্যাগতভাবে বেশি থাকায় তা আর সম্ভব হয়নি। এই চিত্র আশপাশের লোকজন প্রত্যক্ষ করলেও শুরুতে কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি। যদিও পরক্ষণে তারাই একত্রিত হয়ে ছুটে এসে অস্ত্রধারীদের ধাওয়া করে এবং সুমনকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার রাতে তার ওপর হামলায় স্থানীয় ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ জড়িত। এবং কাউন্সিলরের লোকেরাই তাকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশে কুপিয়েছে।
কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী ও রুপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। পক্ষান্তরে সুমন মোল্লা স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকলেও তিনি বরিশাল বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা ফরচুন সু কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমানের কাছের মানুষ হিসেবে সমাধিক পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার বাসিন্দা সুলতান মাহমুদ এবং সুমন মোল্লার মধ্যকার দীর্ঘদিন ধরে রুপাতলীর আলফা-মাহিন্দ্রার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শোনা যায়, ২৫ নং ওয়ার্ডের নতুন কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ গত ১৪ নভেম্বর দায়িত্বগ্রহণের পর সুমন মোল্লাকে কয়েক দফা মারধর করে তার লোকজন। এমনকি মারধর করে সুমন মোল্লাকে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডও ছাড়া করে দেয় কাউন্সিলের বাহিনী।
সুমনের ভাষায়, পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যার উদ্দেশে কাউন্সিলর সুলতান পরিকল্পনা করে লোকজন দিয়ে হামলা করিয়েছে, যেমনটি কিছুদিন আগেও করেছিলেন। অবশ্য সুমন মোল্লার ওপর মঙ্গলবার রাতে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ। বরং তিনি বলছেন, সুমন মোল্লার সাথে অনেক মানুষের শত্রুতা আছে, হয়তো তাদেরই কেউ হামলা করেছে। আলফা-মাহিন্দ্রার সাথে মোটেও জড়িত নন জানিয়ে মি. সুলতান বলেন, আমি বাস মালিক সংগঠনের নেতা এবং তা নিয়েই আছি।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিচুল হক সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সুমন হামলাকারী কয়েকজনের নাম জানিয়েছেন। এই ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’