দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। প্রতিদিনই মৃত্যু ঘটছে, হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন হাজারো রোগী। সেইসঙ্গে ভাঙছে প্রতিদিনের মৃত্যু এবং আক্রান্তের রেকর্ডও। চলতি বছরে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ১৪৬ জন। একই সময়ে আরও ১ হাজার ৭৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল ১৮ জুলাই সর্বোচ্চ ১৩ জনের মৃত্যু হয় এবং ১৫ জুলাই সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৯২২ জন। বাকি ৮৭০ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মারা যাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১৭ জন ও ঢাকার বাইরের ২ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৬ হাজার ৩৯৮ জন ও ঢাকার বাইরে ৭ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে যত মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ও যতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা এর আগে কোনো বছরের প্রথম ছয় মাসে তা হয়নি। জুলাইয়ে ডেঙ্গুতে ৯৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। গত বছরের জুলাইয়ে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা যান গত বছর, ২৮১ জন। এর আগে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে মারা যান ১০৫ জন।
এদিকে মৃত্যুর জন্য বিগত বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু হেমোরোজিক ফেবার ও শক সিনড্রোমকে দায়ী করে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
জুলাইয়ের তুলনায় আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। তবে এবার ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।