নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ধীরে ধীরে ঘনিয়ে আসছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। জয়লাভে বরিশালের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের প্রার্থীগণ রীতিমতো প্রতিযোগীতামূলকভাবে উপস্থিত হচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। যিনি বর্তমানে প্রতিনিধি আছেন এবং যিনি নির্বাচিত হতে চাইছেন কেউ যেন কম নন। তবে ওয়ার্ডের ভোটাররা বর্তমান জনপ্রতিনিধি শহিদুল্লাহ কবিরকে এগিয়ে রেখেছেন। এখন পযর্ন্ত ১০নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর এটিএম শহিদুল্লাহ কবির এবং সাবেক কাউন্সিলর মো. জয়নাল আবেদীনের প্রতিদ্বন্দ্বীতার খবর পাওয়া গেছে।
বরিশাল নগর ভবনের প্রাণকেন্দ্র ঘেঁসে ফজলুল হক এভিনিউ হয়ে লঞ্চঘাট থেকে শুরু করে চাঁদমারী খালের উত্তর পর্যন্ত, ওই দিকে উদয়ন স্কুল হয়ে জেলা প্রশাসকের বাংলো পর্যন্ত বিস্তৃত ১০নং ওয়ার্ড। প্রায় ১২/১৩ কি. মি. কার্পেটিং রাস্তা নিয়ে এই ওয়ার্ডের মানচিত্র। ভোটার সংখ্যা সাত হাজারের অধিক। নগরীর চলতি নির্বাচনী আমলে প্রায় ৭/৮ কি. মি. রাস্তা কার্পেটিং ও সংস্কার করেন বলে জানান বর্তমান কাউন্সিলর এ টি এম শহীদউল্লাহ কবির।
কবির বলেন, চাঁদমারি, রাজা বাহাদুর সড়ক, সার্কিট হাউজের বাইপাস সড়ক, বান্দরোড, ক্লাবরোড, গ্রীন সিটি পার্ক নির্মান সহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নীত করন ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজসহ এই কর্পোরেশনের মধ্য সব চাইতে বেশি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড আমি নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও সম্পন্ন করেছি। কাউন্সিলর কবির বলেন, আমার কাছে কখনো কোন মানুষ কোন কাজের জন্য এসে ফিরে যেতে হয়নি, জনগণের প্রয়োজনে যথাসম্ভব পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। প্রায় শতাধিক ভোটারদের সাথে কথা বলে দুই প্রার্থী সম্পর্কে জানা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কাউন্সিলর কার্যালয়ে নাগরিক সেবা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব মহিলা ভোটার পারভীন বেগম বলেন, শহিদুল্লাহ কবির একজন নম্র ভদ্র ভালো মানুষ। ভাটার খালের বাসিন্দা গৃহিনী নাসরিন জাহান বলেন, কাকা ( শহিদুল্লাহ কবির ) যথেষ্ট ভালো মানুষ। চা দোকানি ফিরোজ জানান, রাত বিরাতে কবির ভাইকে ফোন করে সাহায্য পায়নি এমন মানুষ আপনি খুঁজে পাবেন না।
চাঁদমারি এলাকার ব্যবসায়ী রশিদ বলেন, কবির একজন শিক্ষিত ভদ্রলোক, এবারেও আমরা তাকেই নির্বাচিত করতে চাই। জর্ডন রোডের বাসিন্দা নাহিদ বলেন, কবির ভাই একজন শিক্ষিত ও সৎ মানুষ। জনসাধারনের যে কোন প্রয়োজনে তাকে পাশে পাওয়া যায়। এদিকে বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল্লাহ কবিরের কোন এক সমর্থক সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে সাবেক কাউন্সিলর এবারের প্রার্থী জয়নাল আবেদীন মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বলে দাবি করেন। তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে দ্রুত সটকে পরেন।
মাদক ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিলর বর্তমান প্রার্থী জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমার নামে মিথ্যা রটাচ্ছে প্রতিপক্ষ। জয়নাল আরো বলেন, বিগত নির্বাচনগুলোতে আমি শতশত ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও টাকার কাছে হেরে আমি নির্বাচিত ঘোষণা পাইনি। ১০নং ওয়ার্ডের ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত কেডিসি এলাকায় প্রার্থী জয়নালের রয়েছে ব্যাপক জনসমর্থন। এই এলাকায় ঢুকে কাউকেই জয়নালের বিপক্ষে বলতে দেখা যায়নি। মূলত এই কেডিসিতে জয়নালের বসতবাড়ি হওয়ার সুবাদে তিনি এখানকার জনগনের উপর নিজের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
কারেন্ট মিস্ত্রি আবুল হোসেন বলেন, জয়নাল একজন সহজ সরল লোক। অটোরিক্সা চালক ইদ্রিস ও সম্রাট বলেন, রাত ২/৩ টায়ও জয়নাল ভাইকে পেয়েছি। কেডিসির মুদি দোকানি বাদশা বলেন, জয়নালের মত লোক হয় না। ভোটের মাঠে ১০নং ওয়ার্ডে শহিদুল্লাহ কবির বা জয়নাল আবেদীন কেউই কারো চেয়ে কম নন। একজন নাগরিক সেবায় জনগণের বিশ্বাসের মণিকোঠায় আরেকজন সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে পাশে থেকে ভালোবাসার পূর্ণাঙ্গ আস্থায়।