বরিশাল খাদ্য বিভাগে পেঅর্ডার জালিয়াতি, ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:০৭, ফেব্রুয়ারি ০৬ ২০২৩ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলা খাদ্য বিভাগে খাদ্য সামগ্রীতে পুষ্টিগুণ বাড়ানোর কাজে জামানত হিসেবে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের দেওয়া ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার ১১টি পেঅর্ডার ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। এক ব্যাংকারের সহযোগিতায় এই পেঅর্ডার জালিয়াতি করেন তিনি। ১১টি পেঅর্ডারের মাধ্যমে সরকারকে জামানত বাবদ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকা দওিয়া হলেও সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে ৭ হাজার ২শ টাকা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্ত মিল মালিক ও এক ব্যাংকারকে আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করে খাদ্য বিভাগ। এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার। মামলায় অভিযুক্ত দুই জন হলেন গৌরনদীর এলাহী এগ্রো লিমিটেডের (পুষ্টি মিশ্রন মিল) সত্ত্বাধিকারী মো. ফরাহদ হোসেন এবং অগ্রণী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা ব্যবস্থাপক মো. আলী রেজা। মিলের সত্ত্বাধিকারী হিসেবে কাগজপত্রে ফরহাদ হোসেন লেখা থাকলেও তার প্রকৃত নাম নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সি। তিনি গৌরনদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত রবিবার মধ্য রাতে জেলা খাদ্য বিভাগের পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার ১১টি পেঅর্ডার জালিয়াতির অভিযোগ করেন আসামিদের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয় এলাহী এগ্রো লিমিটেড খাদ্য বিভাগের খাদ্যে পুষ্টিগুণ বাড়ানোর তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। এই কাজে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত মোট ১১টি পেঅর্ডারের মাধ্যমে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার জামানত দেয় এলাহী এগ্রো লিমিটেড। যা যাচাইয়ে ভুয়া প্রমাণিত হয়। খাদ্য বিভাগের হিসেবে জমা হওয়া ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার টাকার পে অর্ডারের প্রকৃত মূল্য মাত্র ৭ হাজার ২শ টাকা। ১শ টাকার একটি পেঅর্ডার জালিয়াতি করে ১ কোটি ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৪ টাকা দেখানো হয়েছে। ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪শ টাকার একটি পেঅর্ডার যাচাই করে পাওয়া গেছে ২শ টাকা। অন্য ৯টি পেঅর্ডারও অনুরূপ জালিয়াতি করে খাদ্য বিভাগে জমা দেয় এলাহী এগ্রো। এছাড়াও ফরহাদ হোসেনের আরও দুটি প্রতিষ্ঠান খাদ্য বিভাগের তালিকাভুক্ত। বিষয়টি জানাজানি হলে গত রবিবার মধ্য রাতে অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন এবং অগ্রণী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক মো. আলী রেজাকে আসামি করে কোতয়ালী থানায় মামলা করে খাদ্য বিভাগ। একই সাথে ফরহাদ হোসেনের সাথে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করে তার মালিকানাধীন ৩টি মিল কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য অফিসের পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন। ২০১৮ সাল থেকে জালিয়াতির ঘটনা ঘটলেও ৫ বছর পর বিষয়টি খাদ্য বিভাগের নজরে পড়ার বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। এর সাথে জড়িত অন্যদেরও শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবী মিল মালিক ও গৌরনদী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সির। পেঅর্ডার জালিয়াতির ঘটনা সঠিক নয় বলে তার দাবি।