বরিশালে করোনায় মারা যাওয়া শিশুর জানাজা ও দাফন করলো পুলিশ

কামরুন নাহার | ২০:০৬, এপ্রিল ১৮ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া শিশুর জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করলো বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। সূত্র মতে, বরিশাল শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে খ্রিষ্টান কলোনি সংলগ্ন হিরণ মিয়ার আমবাগান সড়কে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যায় ১৮ মাস বয়সী এক শিশু। শিশুটির পিতা একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী। শনিবার সকাল ১০টার দিকে নিজঘরে শিশুটির মৃত্যুর খবরে পাড়া-প্রতিবেশী কেউ যায়নি। বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি লাশটি নিয়ে পড়েন বিপাকে। আশপাশের বাসিন্দাদের কাছে আকুতি মিনতি করলেও কেউ ভয়ে এগিয়ে আসেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি জানতে পারে কোতয়ালী থানা পুলিশ। কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসানের নেতৃত্বে সেখানে হাজির একদল পুলিশ। ৬ ঘণ্টার মাথায় বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ ওই ওয়ার্ডের আমবাগান এলাকা থেকে শিশুর লাশটি উদ্ধার করে। পরে গোসল করিয়ে দাফনের ব্যবস্থাও করে। প্রতিবন্ধী সবুজ হাওলাদার জানান, তার ছোট ছেলে দেড় বছর বসয়ী শাহাদাতের কয়েকদিন জ্বর হয়েছিল। গত দুদিন ধরে তার শ্বাসকষ্টও দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে ঘরে রেখে নিয়মিত ওষুধ সেবন করানো হচ্ছিল। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে ছেলের সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের ডাৎ-চিৎকার করে ডাকতে থাকি। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। পরে পুলিশ এসে আমার ছেলের লাশ উদ্ধার করে মাটির দেওয়ার সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করে। এদিকে পুলিশ জানায়, অমানবিক এই ঘটনাটি স্থানীয় এক ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করে থানা পুলিশে খবর দেয়। প্রতিবেশীরা মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে আসলে কেউ বাসার ধারে কাছে যায়নি। বরং দুর থেকে দেখে যে যার মতো করে চলে যাওয়ায় প্রতিবন্ধী চেয়ারের ওপর বসে কাঁদতেছিলেন। পরে বিকেলে কোতয়ালি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসানের নেতৃতে একটি টিম গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এবং শিশুর নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি দাফনের প্রস্তুতি নেয়। এসআই আরাফাত হাসান জানান, লাশটি ঘর থেকে বাইরে এনে গোসল করিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ৫ থেকে ৬জনে জানাযা নামাজ পড়েন। পরে লাশটি আঞ্জুমান মফিদুলের মাধ্যমে শহরের রুপাতলী এলাকায় দাফন করেন। এর আগে শিশুটি করোনা আক্রান্তে মারা গেছে কী না এ তথ্য নিশ্চিত হতে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এসে নমুনা নিয়ে যায়।’