জনবল সংকটে ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:১৫, অক্টোবর ১৬ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জনবল সংকটে খুড়িয়ে চলছে ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। নানা ভোগান্তিতে পরছে রোগীরা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দুইজন জনবল নিয়ে ও কিছু ভাড়াটে জনবলে জোড়াতালি দিয়ে চলছে জেলার একমাত্র মা ও শিশু চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ কেন্দ্রটি। ২০০৫ সালের ২৭ অক্টোবর একজন মেডিকেল অফিসার, একজন ফিমেল মেডিকেল এটেনডেন্ট ও দুই আনসার সৃষ্ট পদ নিয়ে এই স্বাস্থকেন্দ্র চালু হয়েছে। চিকিৎসা সেবা ব্যহত হওয়ায় জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও অন্য জেলা থেকে ডেপুটিশনে ৭ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। কয়েক বছর ধরে শুধু একজন চিকিৎসক প্রতিদিন শতাধিক নারী ও শিশু রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে। এ হাসপাতালে গুরুত্বপূণ পদ অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান অপারেশন। জনবল সংকট থাকলেও এ নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের কেউই জানেন না জনবলের সংখ্যা। জেলা পরিবার ও পরিকল্পনা অধিদপ্তরে জেলা কার্যলয় থেকে বরাদ্ধ হওয়া পদ ও শূন্য পদের তালিকা নিতে পরামর্শ দেন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. জওহের আলী। মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের তৎকালিন উপ-পরিচালক কামাল হোসেন দায়িত্বে থাকাকালীন তার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় একটি অত্যাধুনিক ওটি লাইটসহ সিজারিয়ান টেবিল থাকার পরও ৩ বছরেও তা টেকনিশিয়ান না থাকায় স্থাপন করা যাচ্ছে না। এতে অনেক যন্তপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আউট সোর্সিংএ নিয়োগ পাওয়া একজন পিয়ন কাম চোকিদার দিয়ে অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করানো হচ্ছে। ফিমেল মেডিকেল এটেনডেন্ট শিবানী দাস গুপ্তার পদ অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে দায়িত্ব থাকলেও তিনি কাজ করছেন অফিস সহকারীর কাজ। ২০১২ সালে তিনি এ পদে যোগদানের পর থেকেই নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সদর উপজেলার গাভা রামচন্দ্রপুর, নবগ্রাম, কীর্ত্তপাশা গাভখান ইউনিয়নের ৪জন এফডব্লিওভি কয়েক বছর ধরেই ডেপুটেশনে রয়েছেন মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে। ২০১৯ সালের জুনে ফার্মাসিস্ট অবসরে যাওয়ায় তার স্থলে দায়িত্ব পালন করছেন এফডব্লিওভি মনিরা সুলতানা। অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় ভোগান্তিতে পরেছেন সাধারণ মানুষ। গরীব ও অসচ্ছল রোগীরা বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সারঞ্জাম থাকার পরেও তার ১০ ভাগও কাজে আসছেন বলে রোগীদের অভিযোগ। জনবল না থাকায় বিনামূল্যে ও অপেক্ষাকৃত সুলভ মূল্যে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেশী টাকা খরচ করে বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রসূতি মা ও শিশুরা। তারা অনতিবিলম্বে সরকারের নিকট শূন্য পদে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সহজ করার দাবি জানান। এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও বাংলাদেশ সিভল সার্ভিস (প.প.) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সারা বাংলাদেশের মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের জনবলের সমস্যা রয়েছে। জনবল বাড়ানোর কাজ চলছে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয় চলমান রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কোনো পদ তৈরী না হওয়ায় এ সমস্য চলে আসছে। জেলা পর্যায়ে একটি পূর্ণাঙ্গ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় কাজ চলছে। তখন ডাক্তার ও জনবল আরও বাড়বে।