জোয়ারের পানিতে ভোলার ২৫ গ্রাম প্লাবিত

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৫২, সেপ্টেম্বর ১২ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘনার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ভোলার নিম্নাঞ্চলের ২৫টি গ্রাম। প্রতিদিনই ৩-৪ ঘণ্টা পানিবন্দি থাকতে হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে। অস্বাভাবিত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বসতঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, পুকুর ও মাছের ঘের। জোয়ারের পানিতে রান্না করতে না পেরে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দিরা। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার প্রায় ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হয়ে সদর, দৌলতখান, মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলার প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই গ্রামগুলোর প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। জোয়ারের পানি বসতঘরে প্রবেশ করায় অনেকে তাদের ছোট শিশুদের নিয়ে খাটের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর জাহান বেগম ও ময়না বেগম বলেন, ‘জোয়ারের পানি আমাদের বসতঘরে ঢুকে পড়েছে। ঘরে পানি প্রবেশ করায় আমরা ছোট শিশু সন্তানদের নিয়ে খাটের ওপর উঠে আশ্রয় নিয়েছি। জোয়ারের পানি ঘর থেকে নেমে গেলে আমরা খাট থেকে নামবো।’ একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ঝর্না বেগম বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে রান্নাঘর ও চুলা তলিয়ে গেছে। এ কারণে দুপুরে রান্না করতে পারিনি। এজন্য শিশু সন্তানসহ সবাই না খেয়ে আছি। সন্ধ্যায় জোয়ারের পানি কমলে রান্না করে খাবো।’ এইচএসসি পরীক্ষার্থী আল আমিন। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তাকে প্রাইভেট পড়তে যেতে হয়। কিন্তু জোয়ারের পানি ঘরে প্রবেশ করায় ঘরেও ঠিকমতো পড়তে পারছেন না তিনি। আল আমিন বলেন, ‘জোয়ারের পানি বারবার ঘরে ঢুকে পড়ায় পড়াশোনা নিয়ে চিন্তিত আছি।’ স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে আমাদের রাস্তা তলিয়ে গেছে। মাজা (কোমর) সমান পানিতে নেমে রাস্তায় দিয়ে চলতে হয়। জোয়ারের সময় আমাদের চলাফেরায় অনেক কষ্ট হয়।’ জোয়ারের পানিতে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষক সিদ্দীক। তিনি জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের এলাকায় অনেক কৃষকের আমন ও সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। মাছচাষি নুর হোসেন  বলেন, ‘অতি জোয়ারের পানি পুকুর ও ঘেরে প্রবেশ করেছে। আমার একটি পুকুর ও একটি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। আমার মতো এলাকার অনেকের পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।’ ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আখতার  বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে মেঘনার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি উন্নয়নের বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এদিকে সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে রোববার ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোরেও একই বিপৎসীমার ওপর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পানি।