নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দীর্ঘদিন পরে হলেও বরিশাল নগরের ভেতরে দিয়ে যাওয়া ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। বরিশালের ভুরঘাটা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন চালকরা।
জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, বরিশাল নগরে সাগরদী থেকে দপদপিয়া পুরাতন ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ অভিযানে র্যাব-৮, মেট্রোপলিটন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিদ্যুৎ বিভাগের সদস্যরা সহযোগিতা করছে। অভিযান শেষে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে তাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আর মহাসড়কের বরিশাল অংশ হয়ে বাকি ৫ জেলায় যানবাহন চলাচল করায় এ অংশে কয়েক গুণ যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এতে দুর্ঘটনায় সংখ্যাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই মহাসড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
তবে উচ্ছেদের আওতায় থাকা মহাসড়কের দুটি পেট্রোল পাম্পের অভিযান না চালানোর বিষয়ে তিনি বলেন, পাম্প দুটির কিছু অংশ মহাসড়কের জায়গায় রয়েছে। কিন্তু তার নিচে তেলের ট্যাংকি থাকায় ঝুঁকি এড়াতে আজ উচ্ছেদ চালানো হয়নি। তবে পাম্প দুটিকে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, এরমধ্যে নিজ উদ্যোগে তারা মাটির নিচে থাকা ট্যাংকিগুলো অপসারণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা ছেড়ে দেবে। নতুবা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশাল শহরের মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনার কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছিল। পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর যানবাহনের চাপ বেশি হওয়ায় এর তীব্রতা বেড়েছে। তাই আপাতত বরিশাল শহর অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এর আগে টানা তিন ধরে মাইকিং করা হয়েছে। এতে অনেকে নিজেরা তাদের স্থাপনা সরিয়েও নিয়েছেন আর যারা নেননি তাদের আজ উচ্ছেদ করা হলো। অভিযানে দেড় শতাধিক টিনের ও আধাপাকা দোকানঘর, স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিছু স্থাপনার অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরিশাল জেলার আওতাধীন মহাসড়কের সর্বত্র এ অভিযান চালানো হবে।
সাগরদী এলাকার নাঈম হোসেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীনরা অবৈধভাবে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখল করে যে যার মতো স্থাপনা গড়ে তুলেছিলেন। সেগুলো ভাড়া দিয়ে অর্থ আদায় করছিলেন। এতে মহাসড়কটি সরু হয়ে গিয়েছিল। এ অভিযানের মাধ্যমে সড়ক ও জনপদের জায়গা বেরিয়ে এসেছে। এখন এই জায়গায় সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু না করলে আবারও দখল হয়ে যাবে।