নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ হটলাইনে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায় স্থানীয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহার নেতৃত্বে ওই অভিযান চালানো হয়েছিল।
এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরিশালের উপ-পরিচালক দেবব্রত মণ্ডল। এমন কী কমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
যদিও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন দাবি করেছেন, কারও মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ডাক্তারের সিরিয়াল না পেয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষায় থাকার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ভিজিটে আসেন দুদক কর্মকর্তারা। কখন চিকিৎসকরা আসেন না আসেন সেটা দেখতে।
যদিও কমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুকে বলা হয়েছে, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকা এবং রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দিয়ে ব্যক্তিগত ক্লিনিকে চেম্বার করা বিষয়ে দুদক হটলাইন-১০৬- এ আসা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরিশালের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহার নেতৃত্বে একটি টিম কর্তৃক ৬ সেপ্টেম্বর একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
অভিযানকালে টিম সকাল ৯টায় অভিযোগে উল্লিখিত মেডিসিন ও নিউরোমেডিসিন বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকে তার কক্ষ, ক্লাসরুম বা ওয়ার্ডে কোথাও পায়নি। সে সময় তার নিজ কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।
এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য সময় উক্ত হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো. মনিরুজ্জামান শাহীনের দপ্তরে টিম উপস্থিত হয় এবং তাঁকেও অনুপস্থিত পাওয়া যায়। টিম বায়োমেট্রিক হাজিরা বুথ পর্যাবেক্ষণ করে দেখতে পায়, অধিকাংশ (টিমের সন্মুখে ন্যূনতম ১৫ জন) চিকিৎসকরা প্রায় দেড়ঘণ্টা বিলম্বে বায়োমেট্রিক হাজিরা দেন। অধ্যক্ষকে মোবাইল ফোনে দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযানের বিষয়ে জানানোর পর তিনি দপ্তরে উপস্থিত হন এবং চিকিৎসকদের উপস্থিতি সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক হাজিরার তথ্য প্রদানে গড়িমসি করেন, শেষ পর্যন্ত অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে অভিযোগে উল্লিখিত চিকিৎসককে ১০টায় ফোন করেও পাওয়া যায়নি এবং তার অনুপস্থিতির বিষয়ে অধ্যক্ষ মহোদয় কোনো জবাব দিতে পারেননি। অভিযানকালে ওই হাসপাতালের মেডিসিন, আর্থোপেডিক্স বিভাগে গিয়ে দুই/একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়া অন্য কোনো ডাক্তারের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
অভিযানকালে সেবাপ্রত্যাশী রোগী ও ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণরত রোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতালে চিকিৎসক না থাকা ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার অভিযোগ টিমকে জানায় এবং দুদকের কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চায়।
ফেসবুক পোস্টের নিচে বলা হয়েছে, অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য ও অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে টিম পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশনের কাছে দাখিল করবে।
এদিকে এ ঘটনার পর বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকদের যথা সময়ে হাজির হতে দেখা গেছে।