দুদক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নিলে কঠোর কর্মসূচি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৩৪, সেপ্টেম্বর ০৭ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  অভিযানে গিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষর সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তার দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণ করেছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর এ অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বরিশাল। স্মারকলিপিতে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিএমএ বরিশাল শাখা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসানের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বরিশালের নেতারা। এ সময় বিএমএ বরিশালের সভাপতি ডা. মো. ইসতিয়াক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মনিরুজ্জামান শাহিন, সাগঠনিক সম্পাদক ডা. মো. মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, সাংস্কৃতিক ও বিনোদন সম্পাদক ডা. শিরীন সাবিহা তন্বী, সদস্য ডা. এসএম সারওয়ার, ডা. সুদীপ কুমার হালদার, ডা. মো. নুরন্নবী তুহিন, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. আশীক দত্ত উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বরিশাল শের-ই বাংলা মিডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম, মেডিক্যাল কলেজের উপাধক্ষ্য ডা. জি.এম. নাজিমুল হক উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান চিকিৎসকদের বিষয়টি নিয়ে ধৈর্যের পরিচয় দেওয়ায় ধন্যবাদ জানান। বিষয়টি এরইমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখার কথাও বলেন তিনি। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ সেপ্টেম্বর সকালে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে দুদকের সহকারী পরিচালক ডা. রাজ কুমার সাহা ও তার টিম উপস্থিত হয়। এসময় সেখানে থাকা রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক সার্বক্ষণিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য শুদ্ধাচার পুরষ্কার প্রাপ্ত ডা. মাসুম আহম্মেদ এবং অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয় এবং হাজিরার ব্যাপারে অসন্মানজনকভাবে কৈফিয়ত তলব করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন স্বাস্থ্য শিক্ষা মহাপরিচালকের অনুমতি না পেয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরার তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারেননি। এজন্য তার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা হয় এবং বিভিন্ন পজিশনে তার ছবি তোলা হয়। একইসঙ্গে মামলার ভয় দেখানো হয়। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগ দাখিল না করে এ ধরনের ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে এবং সাংবাদিকদের ডেকে এনে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনে প্ররোচিত করা হয়। এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা বরিশালের সকল চিকিৎসককে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান ও মেডিক্যাল শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করেছে। স্মারকলিপিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) বরিশাল শাখা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার মূল হোতা দুদকের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহার দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণের ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়। বিএমএ বরিশাল শাখার সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপির অনুলিপি বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি/মহাসচিব ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি/মহাসচিবের নিকটও পাঠানো হয়েছে। এদিকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না দিলেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার সাহা। প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, হাজিরা খাতা চাওয়ার পাশাপাশি অধ্যক্ষসহ দেরিতে আসা চিকিৎসকরা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলে সেই ছবি তুলতে গেলেই বিপত্তি বাধে দুদক টিমের সঙ্গে।