কলাপাড়ায় বেড সংকটে চিকিৎসা মেঝেতে

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:১১, সেপ্টেম্বর ০৫ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥  দেশের অন্যতম গুরুত্বপুর্ন পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকত ঘেঁষা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র নামেই শুধু ৫০শয্যার হাসপাতাল। প্রকৃতপক্ষে ৩১শয্যার সেবাও নেই এই হাসপাতালে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্রটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বেড সংকটে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের মেঝেতে। হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ৩১ শয্যার এ হাসপাতালকে ৫০শয্যায় উন্নীত করা হয়। ১২টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ এবং পাশের তালতলী-রাঙ্গাবালী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ৩১ শয্যার এ হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে আউট ডোড় -ইনডোর ও জরুরী বিভাগ থেকে ২০০-২৫০ রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহন করে থাকে। হাসপাতালে ৫০ টি বেড থাকলেও ১৯টি পুরুষের, মহিলা ২১(্এর মধ্যে ৭টি ই ও সি), শিশু ১০টি। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসাস্থল কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্র। আবহাওয়া ও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের সর্দি-কার্শি, শ্বাসকষ্ট জ্বর, ডায়রিয়ার প্রকোপ, ঘনঘন বমি ও পাতলা পায়খানা, মারামারি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি দিন অসুস্থ্য রোগীরা এ কমপ্লেক্্র ভর্তি হন কিন্তু বেড সমস্যার কারনে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে মেঝেতে। অনেকে শরীরের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন রোগীরা। এসে বেড না পাওয়ায় হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ৫০ বেডের স্থানে শতাধিক রোগীর চাপে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় এদের মধ্যে অনেকেই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে বেড ও মেঝেতে জায়গায় না পেয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায়। প্রয়োজনীয় ঔষধ, খাবার পাচ্ছেন না অনেক রোগী। এই ধরণের নড়বড়ে অব্যবস্থাপনার কারণে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০’শ রোগীকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। হাসপাতালের অভ্যান্তরে ৫০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয়ে থাকে অনেক বেশি। হাসপাতালে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতালে গুরুত্বপুর্ন শুন্য পদ গুলো হলো- জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী), জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি এন্ড অবস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (নাক, কান, গলা), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোঃ), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌন), পরিসংখ্যানবিদ-১, স্টোর কিপার-১, প্যাথলজিস্ট-১, ডেন্টাল সার্জন-১, মেডিকেল অফিসার (ইউঃ আয়ুঃ হোমিও), উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিঃকর্মকর্তা-১, মেডিকেল টেকঃ (ফার্মাঃ)-১, মেডিকেল টেকঃ (ল্যাবঃ)-২, মেডিকেল টেকঃ (ফিজিওঃ)-১, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক-২, টিকিট ক্লার্ক-১, জুনিয়র মেকানিক-১, ওটি বয়-১, আয়া-১, নিরাপওা প্রহরী -১, কুক-২, সুইপার-৩, যক্ষা কুন্ঠ নিয়ন্ত্রন সহকারী-১, স্বাস্থ্য পরিদর্শক-২, স্বাস্থ্য সহকারী-১৬, সি এইচ, সি পি-৩, এম এল এস, এস-৩। মেঝেতে চিকিৎসা নেওয়া রোগী আসমা বেগম/পারভীন বেগম জানান, আমার শরীরে অনেক দিন ধরে জ্বর জ্বর এজন্য ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার বলছে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিন। বেড না পাওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি গরিব মানুষ মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হবে। কিন্তু দুর্গন্ধ ও মশা বেশি। এছাড়া ওষুধ কিনতে হয় বাহির থেকে। খুব কষ্ট হয়। একই সমস্যার কথা বলেন হাসপাতালে ভর্তিকৃত বেড ও মেঝেতে চিকিৎসা নেয়া রোগীরা। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিন্ময় হাওরাদার জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের সীমিত বেডের বিপরীতে অনেক বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় অনেকে মেঝেতে জায়গা নিয়ে সেবা নিচ্ছেন। এ এলকাটা খুবই গুরুত্বপুর্ন এড়িয়া। ২৫০ রোগী সব সময় চিকিৎসা নিয়ে থাকে। সরকারের উন্ন্য়নমুলক কাজ চলছে এ অঞ্চলে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পর্যটন এলাকা হিসেবে সব সময় লোক সমাগম থাকে তাদের কিছু হলে এ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। আমি মাননীয় সংসদ সদস্য ডিউলেটার কয়েক বার জমা দিয়েছি তার কাছে। আমি উর্ধ্বতনকর্তৃপক্ষ কয়েক বার জানানো হয়েছে কিন্তু কোন ফল দেখতেছিনা। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, কলাপাড়া হাসপাতালে প্রতিদিনেই রোগীর সংখ্যা বেশি এজন্য ১০০শযা হাসপাতাল দরকার। আমরা বর্তমানে একটি উপজেলা ১০০শয্যা কাজ করছি পর্যাক্রমে কলাপাড়া করা হবে। যদি মাননীয় সংসদ সদস্য ডিউলেটার দিতে ও সংসদে ্এ নিয়ে আলোচনা করতো তাহলে এটি অল্পতে কার্যকর হতো।