রাজাপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিশুদের পাঠদান

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৭:৫৪, আগস্ট ৩১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের ১০নং নৈকাঠি এস হক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা। স্কুলটির ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালাতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, ১৯৯৯ সালে চার কক্ষবিশিষ্ট স্কুল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। একটি কক্ষে অফিস আর তিনটি কক্ষে দুই শিফটে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয় শ্রেণির পাঠদান চলে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট ৯৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। নির্মাণের পর থেকে এই ভবনটি একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। গত কয়েক মাস আগে সংস্কার করায় বাইরে থেকে দেখে ফিটফাট মনে হলেও আদতে ভবনটির অবস্থা বেশ নাজুক। ভবনের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। পিলার ও সিলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়ে লোহার রড বের হয়ে গেছে। বর্ষাকালে ছাদ থেকে পানি পড়ে। এছাড়া বিদ্যালয়ে অন্য কোনো ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যেই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।   এখন যে কোনো সময় ভবনটি ধ্বসে পড়তে পারে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা সব সময় আতঙ্কে থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান। এ কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও দিনদিন কমছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইমুন হোসেন, সোয়াইব হাসান, আবির আহম্মেদ, রাবেয়া বসরী জানায়, ক্লাসরুমে মাঝে মাঝে ছাদের পলেস্তারা খসে তাদের শরীরে পড়ে। ভয়ে তাদের অনেক সহপাঠী এখন স্কুলে আসে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মোজাম্মেল তালুকদার, মরিয়ম বেগম, সুলতান মাঝী, সেলিম জমাদ্দার জানান, স্কুলের ভবনটি জরাজীর্ণ, যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাই বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. শফিউল আলম বলেন, ভবনটি নির্মাণের সময়ই অনিয়ম হয়েছে। ভবনটির বর্তমান যে অবস্থা তাতে যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা খালেদা শিরিণ বলেন, ভবনের এ অবস্থা দেখে ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায় না। দিনদিন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অভিভাবকদের মধ্যেও ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে অনীহা দেখা দিয়েছে। তাই এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পাশাপাশি একটি নতুন ভবন জরুরি হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কথা ওপর মহলে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।