আ. লীগ নেতার মামলায় সাবেক যুবলীগ নেতা কারাগারে

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:০৬, আগস্ট ২৯ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানের নামে চাঁদা দাবি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার সাবেক যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সালেককে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (২৮ আগস্ট) বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আল ফয়সাল তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে শনিবার তাকে গ্রেফতার করে কাউনিয়া থানা পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম আবদুর রহমান মুকুল জানান, শোক দিবস পাল‌নে মাসব্যাপী কর্মসূ‌চি পালন কর‌ছে মহানগর আওয়ামী লীগ। যার ধারা‌বিহকতায় ৫ আগস্ট ৫ নম্বর ওয়া‌র্ডে শোক সভা করা হ‌য়েছে। একই ব্যানা‌রে পরবর্তী সময়ে পুনরায় একই কর্মসূচির আ‌য়োজন ক‌রে চাঁদাবাজির অভি‌যোগ উঠেছে এক‌টি চ‌ক্রের বিরু‌দ্ধে। এই ঘটনায় শ‌নিবার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির শামীম ৪/৫ জন অজ্ঞাত ও ৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। সে অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভূক্ত হলে আসামিদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন সালেককে গ্রেফতার করা হয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার অন্য আসামিরা হলেন দক্ষিণ পলাশপুরের মো. শাহাদাৎ হোসেন সজিব ভূইয়া, পলাশপুরের মো. সবুজ শিকদার, মো. আমির হোসেন, মো. সুজন শিকদার ও শাহাবুদ্দিন দুলাল। মামলার বাদী ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির শামীম জানান, নগরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ আগস্ট মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু গত ২৪ আগস্ট আসামিরা আমাকে ডেকে নেয় এবং ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠানের জন্য ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন, যা দিতে না চাইলে তারা হুমকিও দেন। এরপর ২৬ আগস্ট আসামিরা আমার পথরোধ করে চড়-থাপ্পর মেরে ভয়ভীতি দেখিয়ে সঙ্গে থাকা ৫ হাজার ২২০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আসামিরা যাওয়ার সময় আমাকে খুন জখমের হুমকি দেয়। তখন আমি দেখতে পাই আসামিরা বাংলাদেশ মহানগর আওয়ামী লীগ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানারে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান করছে। বিষয়টি মহানগর আওয়ামী লীগ ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে সাথে সাথে জানাই। পরবর্তীতে ২৭ আগস্ট থানায় মামলাটি দায়ের করি। এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির বাইরে দলের ব্যানার ব্যবহার করে কেউ শোক দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে তাদের আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৭ আগস্ট) ব‌রিশাল মহানগর আওয়ামী লী‌গের অনুষ্ঠিত জরুরি এক সভা থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নগ‌রের কা‌লিবা‌ড়ি রোডস্থ সের‌নিয়াবাত ভব‌নে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে জরুরি সভা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দলটি। দপ্তর সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমনের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মহানগরভুক্ত সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সভায় গত ২৬ আগস্ট বিকেলে নগরীর ৫ নং ওয়ার্ডে কতিপয় অসাধু সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানার ব্যবহার করে শোক সভার নামে একটি প্রহসনমূলক সভার আয়োজন করে, যা সভার সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম. জাহাঙ্গীর সভায় অবহিত করেন। অত্যন্ত গর্হিত ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড। যেখানে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শোকাবহ আগস্টের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৫ আগস্ট ৫ নং ওয়ার্ডে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বরিশাল মহানগরের আয়োজনে শোকসভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কতিপয় অসাধু সংগঠনবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের উক্ত কর্মসূচি সম্পূর্ণ অবৈধ। যার সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল মহানগরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সভার সকল বক্তা এই হঠকারীমূলক ও সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং এরূপ হঠকারীমূলক কর্মসূচির আয়োজকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।