মেশিন থেকেই ফরচুন সুজের কারখানায় আগুন, মালিক বলছেন ষড়যন্ত্র
দেশ জনপদ ডেস্ক|২০:২৭, আগস্ট ২১ ২০২২ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ লিমিটেডের কারখানায় লাগা আগুন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, ষড়যন্ত্র করে আগুন লাগানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালকের দপ্তরের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর আব্বাস উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ৩ টা ১২ মিনিটের দিকে জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বর থেকে আমরা কল পাই। ৩ টা ১৯ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছি এবং প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পরে ৪টা ১৯ মিনিটের দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।
তিনি বলেন, আগুনের উৎস শনাক্ত হওয়ায় দ্রুতই নেভানো সম্ভব হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৬ ইউনিট একসঙ্গে কাজ করে দ্রুততার সঙ্গে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্টোর রুমের আগুন অন্য কোনো কক্ষে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দেইনি। ফলে ওই একটি কক্ষে যতটুকু পুড়েছে। আর আগুন নেভানোর পানিতে আশপাশের কক্ষের কিছু পণ্য ভিজতে পারে। ফরচুন কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে বলেছেন, এক কোটি টাকার মালামাল পুড়েছে। তবে তদন্ত ছাড়া সঠিক অঙ্ক বলা মুশকিল।
উদ্ধারে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন কর্মী বলেছেন, কারখানার দোতলার যে কক্ষটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেটি মূলত জুতা প্রস্তুতের কাঁচামাল সংরক্ষণের কক্ষ। সেই কক্ষের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখতে হয়। এজন্য ফরচুন কর্তৃপক্ষ একটি মেশিন স্থাপন করেছেন। মেশিনটি জেনারেটর দিয়ে চালানো হতো। উদ্ধার কাজ পর্যবেক্ষণ করার সময় মেশিন থেকে শর্ট সার্কিটের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। কারণ ওখানে কোনো জ্বালানি কিংবা দাহ্য পদার্থের অস্তিত্ব আমরা পাইনি।
তবে কারখানার মালিক বলেছেন, যে কক্ষে আগুন লেগেছে, সেখানে বৈদ্যুতিক লাইন সেই। আবার যে কেউ চাইলেই সেই কক্ষে প্রবেশ করতে পারেন না। সুরক্ষিত সেই কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্বাভাবিক কিছু নয়। আমি মনে করছি, ষড়যন্ত্র করে আগুন লাগানো হয়েছে।
ফরচুন সুজের শাখা প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ার সুজের ম্যানেজার (অ্যাডমিন) জাকির হোসেন বলেন, কীভাবে আগুন লেগেছে তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। ওই কক্ষের কিছু কম্পিউটার ও ফাইলপত্র বের করতে পেরেছি। বাকিসব পুড়ে গেছে।
ফরচুন সুজের শ্রমিক রাবেয়া বলেন, যেখানে আগুন লেগেছে সেটি ‘ম্যাটারিয়াল’ রুম। ম্যাটারিয়ালের পোড়া গন্ধে অনেক শ্রমিক অসুস্থও হয়ে পড়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল জেলার উপ-সহকারী পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, ছয় ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। উদ্ধারকারীদের প্রতিবেদন বিভাগীয় উপ-পরিচালক স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি সেটি ঢাকায় পাঠাবেন। সেখান থেকে তদন্ত কমিটি করে দেবে। তদন্ত কমিটি মূলত আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কাজ করবে। তাদের প্রতিবেদনে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
এই কর্মকর্তা বলেন, কয়েক বছর ধরে আমরা লক্ষ্য করেছি, এই প্রতিষ্ঠানটিতে ঘন ঘন আগুন লাগছে। এটি একটি বড় প্রশ্ন। কেন আসলে একটি প্রতিষ্ঠানে বার বার আগুন লাগছে? আমরা এই প্রশ্নের উত্তর জানতেও চেষ্টা করব।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ফরচুন সুজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি গঠনে কাজ করছি।