নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরিশালের বাজারগুলোতে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-ডাল, পেঁয়াজ, চিনি, ময়দা, মুরগি, ডিম ও সবজির দাম বেড়েছে। মাছের বাজারও চড়া। দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের চিন্তা বেড়ে গেছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটো ১০ টাকা বেড়ে ১৬০, মুলা ১০ টাকা বেড়ে ৪০, কাঁকরোল ১০ টাকা বেড়ে ৫০, শসা ২০ টাকা বেড়ে ৬০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা, চিচিঙা ৪০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা ও চাল কুমড়া ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আলু প্রতি কেজি ২৭-২৮ টাকা, দেশি আদা ৮০ টাকা, চীনা আদা ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, চীনা রসুন ১২০ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা ও ছোট দানার মসুর ডাল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্যাকেট আটা ৫৫ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, খোলা চিনি ৫ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা ও প্যাকেট চিনি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা কেজিতে বেড়েছে। খুচরা বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা। একইভাবে ২ টাকা বেড়ে ভালো মানের বিআর-২৮ চাল কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬০ টাকা।
বাজারে সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে বেড়ে ২৮৫ টাকা, ব্রয়লার ১৫০ থেকে বেড়ে ১৮৫ টাকা ও কক বা লেয়ার ২৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের হালিতে ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। প্রতি হালি ডিম এখন ৪৮-৫০ টাকা। গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা। আর খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায়।
সরবরাহ কম থাকায় ইলিশের দাম চড়া। মাঝারি সাইজের ইলিশের কেজি এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি কেজি বেলে ৯০০, আইড় ১২০০, নদীর চিংড়ি এক হাজার ৩০০, বড় রুই ও কাতল ৪৫০-৫০০ টাকা। চাষের শিং ৪০০-৫০০ টাকা, কৈ ২০০-২২০, পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, দেশি শিং ৯৫০-১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর পুরান বাজারে কেনাকাটা করতে মাসুদ রানা নামের এক ক্রেতা জানান, দাম বাড়ার আগে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল। এখন চোখে অন্ধকার দেখছি। চাহিদা থাকলেও উচ্চমূল্যের কারণে কমিয়ে কিনতে হচ্ছে।
নগরীর পোর্টরোড বাজারের খুচরা মুদি দোকানি হাবিবুর রহমান বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, পেঁয়াজ, চিনি, ময়দা, ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মুদি পণ্যে এখনো সেভাবে প্রভাব পড়েনি। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। এসব বিবেচনা করে বলাই যায়, শিগগিরই আরেক দফায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। পাইকারি আড়ত থেকে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।