এই আকালের বাজারে টিকে থাকলে, পরে ফল খাব

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:২৮, আগস্ট ১৩ ২০২২ মিনিট

রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥  বর্ষার মৌসুমি ফল ও বারোমাসি, বিদেশি নানান ফলে ভরপুর ঢাকার বাজার। তবে, ক্রেতারা বলছেন বিদেশি ফলের দাম তুলনামূলক বেশি। দেশি ফলের দাম অন্য বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি। বন্যা পরিস্থিতির কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় এবং পরিবহন খরচ বাড়ায় দাম কিছুটা বেশি বলছেন বিক্রেতারা। শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাহারি ফলের সমাহার। মৌসুমি ফলের মধ্যে আছে আম, বিলাতি গাব, কদবেল, পেঁপে, তাল, জাম্বুরা, কাঁটা জাম্বুরা, আমড়া, আমলকির মতো মুখরোচক ফলগুলো। পাশাপাশি বারোমাসি ফলের মধ্যে নারিকেল, কলা, ড্রাগন, কমলা, স্ট্রবেরি, রাম্বুটান, কাঠলিচু দেখা গেছে বাজারে। কেমন দাম বাজারে কাঁঠালের আকার-আকৃতি অনুসারে প্রতিটি ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি জাম ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, লটকন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি। জাম্বুরা আকৃতি ভেদে ১২০-১৫০ টাকা জোড়া, ড্রাগন ২০০-২২০ টাকা, আমড়া প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা, কমলা ২০০ টাকা, থাইল্যান্ডের রাম্বুটান ৭৫০-৮০০ টাকা, নিউজিল্যান্ডের কিউই ৬০০-৭০০, পিয়ার ফল ৩০০, রাম্বুটান ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, আনারস প্রতি জোড়া ১০০-১২০ টাকা, কেজি প্রতি জামরুল ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি পিস তাল ছোট (তিন কোষ) ১২ থেকে ১৫ টাকা, বড় তাল (তিন কোষ) ২০ টাকা, দুই কোষের তাল প্রতি পিস ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতারা যা বলেন কারওয়ান বাজারের পাইকারি ফলের আড়ৎ জাকির এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী জাকির হোসেন  বলেন, বাজারে ভরপুর ফল আছে। তবে, বিক্রেতা কম সে তুলনায়। বাজারও কিছুটা গরম। দৈনিক গড়ে ১৫-২০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে, সারাদেশে বন্যা হওয়ায় কিছু-কিছু জায়গায় উৎপাদন কমে গেছে। ফলে, দাম খানিকটা বেশি। একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আলী হোসেন বিক্রি করছিলেন আমড়া, আমলকি এবং বিলেতি গাব। তিনি  বলেন, ফলের বাজারে আগের তুলনায় ক্রেতা কম। আগে আষাঢ়-শ্রাবণের এই সময়ে ভালো বেচাবিক্রি হতো। এখন তো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসেরই দাম বেশি। মানুষ তো আর চাল-ডাল কেনা বন্ধ রেখে ফল কিনবে না। ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া এক কেজি আমড়া কেনার জন্য অনেকক্ষণ ধরে বিক্রেতার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করছিলেন হাসান আহমেদ নামের একজন। কথা হয় তার সঙ্গে। বাংলানিউজকে হাসান বলেন, স্ত্রী আমড়া খেতে চেয়েছে। ১ কেজি আমড়া দাম চাচ্ছে ১২০ টাকা। পরে, বিক্রেতা সম্মত হওয়ায় ১১০ টাকায় ১ কেজি আমড়া কিনে চলে গেলেন তিনি। জাম্বুরার দোকানে দাঁড়িয়ে দাম করছিলেন হাশিম মোল্লা নামের একজন। কথা হলে  তিনি বলেন, আগে প্রায়ই ফল কিনতাম। বাসায় বাচ্চা-কাচ্চা আছে। এখন তেমন একটা কিনতে পারি না। আমি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় অনেকদিন পর আজ এক জোড়া জাম্বুরা নিচ্ছি। তেঁজগাও এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী ইলিয়াস মোল্লা  বলেন, কারওয়ান বাজারে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় ফল। সেজন্য এলাম। এসে দেখি দাম আগুন ছড়াচ্ছে। ফল কিনিনি। এই আকালের বাজারে টিকে থাকতে পারলে সামনে খেতে পারব। একাধিক ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মূলত সকল প্রকার নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ফলের বাজারেও। বিক্রেতারা আশা করছেন, সংকট কেটে গেলে ভালো বিক্রি হবে তাদের। ক্রেতারা আশায় আছেন বাজার স্বাভাবিক হওয়ার।