কাউখালীতে মুক্তিযোদ্ধার ওপর সন্ত্রাসী হামলা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০১:০২, আগস্ট ০৭ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কাউখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার সন্তানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে প্রভাবশালীরা। হামলার বিষয় উল্লেখ করে কাউখালি থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও আসামীরা এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। জানা গেছে, গত মাসের ২৭ তারিখ গত বুধবার পিরোজপুর জেলার কাউখালি থানার পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের চিরাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী মোঃ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৪/৫ জন ভাড়াটে লোক নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীর ছেলে মীর জিয়া এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে আহত করে সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাকে কাউখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই-বাংলা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী কাউখালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের ১০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি কাউখালী থানা পুলিশ। এ বিষয়ে কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ বনী আমিন জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী’র ছেলে মীর জিয়া বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৭ তারিখ বুধবার বেলা ১১টার দিকে চিরাপাড়া বাজারে দুই অটোরিকশা চালকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি আমার নজরে এলে ভিডিও ধারণ শুরু করি। হঠাৎ করে চিরাপাড়া গ্রামের সোহরাব হাওলাদারের পুত্র রফিক ইচ্ছাকৃভাবে এগিয়ে গিয়ে ভিডিও করা দেখে ক্যামেরার সামনে অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। তার এ ধরনের অশ্লীল কথা-বার্তার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার উপর চড়াও হয়। পরে আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী বিষয়টি নিয়ে মুদি ব্যবসায়ী মোঃ রফিকুল ইসলামের কাছে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এক পর্যায়ে রফিক তার বাবা সোহরাব, ভাই রবিউল ও সোহাগসহ ৫/৬ জন মিলে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় রফিক আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বলে, ‘তোর মতো মুক্তিযোদ্ধাকে মেরে ফেলে দিলে আমাদের কিছুই হবে না।’ এদিকে হামলার বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী বলেন, আমার ছেলেকে অশ্লীল কথা বলার কারণ জানতে চাইলে মুদি ব্যবসায়ী রফিক ও তার পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে আমার উপর হামলা চালিয়েছে। আমার মুখের দাঁড়ি টেনে ছিড়ে ফেলেছে। কান্নাজরিত কন্ঠে তিনি বলেন, জীবনবাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আমাদেরকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বলা হয়। আর এখন সন্ত্রাসীদের হাতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের মার খেতে হচ্ছে। এ লজ্জা কোথায় রাখি? প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন বিচার পাইনি। এদিকে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু তালুকদার বলেন, ঘটনার সময় আমি সরেজমিনে ছিলাম না। এক পক্ষ বলছে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীকে মারধর করা হয়েছে, অপরপক্ষ বলছে শুধু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে কেবলমাত্র। তবে বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে আমি ডেকেছি। কেউ এখনো আসেনি। তাছাড়া বিষয়টি কাউখালী থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। কার দোষ পুলিশ ভালো বলতে পারবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা: খালেদা খাতুন রেখা বলেন, হামলার খবর শুনে আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলীকে কাউখালী হাসপাতালে দেখতে যাই। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছে, আগে থেকেই তার হার্টের সমস্যা ছিল। দু’পক্ষের উত্তেজনায় অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। শরীরে কোন গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল কিনা জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, তেমন কোন আঘাত ছিল না বলে জানিয়েছেন হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথেই দেখছি।