নিজস্ব প্রতিবেদক॥ কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বরিশাল সারা বাংলাদেশে পরিচিত ছিল শস্য ভাণ্ডার হিসেবে, কিন্তু আজ এ শস্যভাণ্ডার কিছুটা খাদ্য ঘাটতির এলাকা। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া দরকার বা অর্থ বরাদ্দ দরকার সেগুলো দেখছি।
আমরা দেখতে চাচ্ছি এখানকার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কত দ্রুত সেই গৌরবকে পুনর্জীবিত করতে পারবো।
বুধবার (০৩ আগস্ট) বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে তৈল ফসলের অন্তর্ভুক্তি এবং ধান ফসলের অধিক ফলনশীল জাতসমূহের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-আগে মানুষ সরিষার তেল খেত, বিদেশ থেকে পাম তেল, সয়াবিন তেল কিছুই আনতে হতো না, কিন্তু এখন কেন লাগছে। আমাদের এক কৃষক ভাই বলেছেন, পাম-সয়াবিন খেয়ে গ্যাসের ওষুধ খেতে হয়। তিনি সূর্যমুখী খেয়ে সেই কষ্ট থেকে বেঁচেছেন এবং অতিরিক্ত খরচও কমিয়েছেন। প্রতিবছর ২০-২৫ হাজার কোটি টাকার শুধু ভোজ্যতেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সবাই তেল খায় কিন্তু দেশের ৯৯ শতাংশ মানুষ জানে না কত টাকার তেল বিদেশ থেকে আনতে হয়। এই ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করলে সারা বরিশালকে সমৃদ্ধ করে ফেলা যায়।
মন্ত্রী বলেন, আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি আগামী তিন বছরের মধ্যে ৪০ ভাগ বিদেশি আমদানি কমিয়ে নিয়ে আসবো। আমরা যদি ৪০ শতাংশ তেলের আমদানি সারা দেশে কমাতে পারি, তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট অনেকাংশে কমে যাবে।
এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে একটু কষ্ট করতে হবে। তবে হাহাকার হবে না, চরম সংকট হবে না, দুর্ভিক্ষ হবে না। যদিও বিএনপি এই সুযোগে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ হলে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমলে বাংলাদেশেও সারের দাম কমবে। সারের দাম বাড়ানোয় খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
মন্ত্রী বলেন, গত দুই থেকে আড়াই বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছিল। বিশ্ব বাজারে এক কেজি সারের দাম বর্তমানে ৮১ টাকা। সেই সার ভর্তুকি দিয়ে দেশে ১৬ টাকায় বিক্রি হতো। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ হলে সারের দাম কমলে এখানেও কমবে। কৃষকরা ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার করে। সামগ্রিক অর্থনীতিতে ভারসাম্য আনার জন্য সারের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
কর্মশালায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুর ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিনুল উল আহসান, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার প্রমুখ।