গর্ভের ফুল পেটে রেখেই সেলাই, পিরোজপুরে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:১৩, আগস্ট ০২ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ পিরােজপুরে মনিরা বেগম (২৩) নামে এক প্রসূতি নারীর অস্ত্রোপচারের পর পেটে গর্ভফুলের অংশ রেখেই সেলাই করে দেওয়ার অভিযােগে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে ভুক্তভােগী ওই নারীর স্বামী জসিম খান বাদী হয়ে পিরােজপুরের অতিরিক্তি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক মাে. ইকবাল মাসুদ মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী এ এস ওমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভােগী ওই নারীর নাম মনিরা বেগম। তিনি পিরােজপুর সদর উপজেলার আলামকাঠী এলাকার জসিম খানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় খুলনার একটি হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। মামলায় অভিযুক্তরা হলেন স্থানীয় আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হােমের চিকিৎসক শিকদার মাহমুদ এবং ম্যানেজার সঞ্জয় মিস্ত্রী। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুলাই আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হােমের চিকিৎসক শিকদার মাহমুদের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি মনিরা বেগমকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে ক্লিনিকের ম্যানেজারের চাপে দুপুরেই মনিরা বেগমের অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়। ওইদিন দুপুরে ডা. শিকদার মাহমুদ তড়িঘড়ি করে ক্লিনিকে এসে রােগীর অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসক প্রসূতি মনিরা বেগমের পেট প্রয়ােজনের চেয়ে বেশি কেটে ফেলেন এবং নবজাতক শিশুর নাভির অংশ কেটে তা না বেঁধে রাখেন। তিনি প্রসূতি নারীর গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতর রেখে অপরিষ্কার অবস্থাই পেট সেলাই করে দিয়ে দ্রুত চলে যান। মনিরা বেগমকে বাড়ি নিয়ে গেলে কয়েকদিন পর তার সেলাইয়ের স্থান থেকে প্রচুর রক্ষক্ষরণ শুরু হয়। পরে ওই ক্লিনিকে ডা. শিকদার মাহমুদকে বিষয়টি জানালে তিনি রােগীকে কােনো চিকিৎসা না দিয়েই পিরােজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। পরে রােগীকে পিরােজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে খুলনার একটি হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। এ সময় রােগীকে মােট ১৪ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার প্রয়ােজন হয়। খুলনার চিকিৎসকরা রােগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কয়েকটি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষায় দেখা যায় ওই নারীর গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতরে রেখে সেলাই করা হয়েছে।