বরিশালের সাবেক সিটি মেয়র কামাল আর নেই

দেশ জনপদ ডেস্ক | ০১:১৫, জুলাই ৩১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব কামাল আর নেই। শনিবার (৩০ জুলাই) রাত ১১টায় রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আহসান হাবিব কামালের ছেলে রুপম জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। শনিবার রাতে হঠাৎ শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যায়। এরপর রাত ১১টার দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান তিনি।

এদিকে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ জানান, আহসান হাবিব কামাল বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। রাতের মধ্যেই তার মরদেহ বরিশালে আনা হবে। সকাল থেকে তার বাসভবনে দলের সকল স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবে। এছাড়া দ্রুতই মরহুমের জানাজার নামাজ ও দাফন এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎসজীবী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী শওকত হোসেন হিরনকে হারিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। ১৯৯১ সাল থেকে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন হলে তিনি হন ভারপ্রাপ্ত মেয়র। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন মিলিয়ে ১৪ বার বাজেট দিয়েছেন তিনি। তবে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকা জরিমানার দণ্ডাদেশ দেন আদালত। তার বিরুদ্ধে ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন তৎকালীন জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা আবদুল বাছেত। মামলায় অভিযোগ আনা হয়, ১৯৯৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন পর্যন্ত পৌর এলাকার টেলিফোন শিল্প সংস্থা কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের নামে ভূয়া জাল প্যাড তৈরি করে, ভূয়া দরপত্রের মাধ্যমে ভূয়া ঠিকাদার নিয়োগ দেখিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে বরিশাল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চলতি হিসাব খুলে টেলিফোন সংস্থার দেওয়া ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ৪টি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকার রাস্তা মেরামত দেখিয়ে বাকি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এই মামলায় সাজা হওয়ার পর ২০২১ সালের ১৫ জুন বিচারপতি মো. সেলিমের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনলাভের পর তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যান এবং সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বরিশালে শোকের ছায়া নেমেছে। বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা শোক জানিয়েছেন।
এছাড়াও শোক জানিয়েছেন দেশ জনপদ পত্রিকার সম্পাদক মির্জা রিমন। এক শোক বার্তায় তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।
আহসান হাবিব কামাল স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ে রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।