বরিশালে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:০৫, জুলাই ০৬ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন বধ্যভূমি এলাকায় সাইলো (খাদ্যগুদাম) নির্মাণ নিয়ে ফের সৃষ্টি হয়েছে সংকট। কেটে ফেলা হয়েছে শতবর্ষী অনেক গাছ। ধ্বংসের পথে তৎকালিন এডিসি শহীদ কাজী আজিজুল ইসলামের সমাধী স্থল। শুধু তাই নয়, সাইলো নির্মাণের জন্য বধ্যভূমি সংলগ্ন দিঘিটি অধিকাংশই ভরাট করা হয়েছে। এতে বধ্যভূমি ও এর আশপাশের এলাকার সৌন্দর্য ও ইতিহাস-ঐতিহ্য বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে এতে আপত্তি জানায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং সুশীল সমাজ। গতকাল বুধবার মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় সুধিসমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন পালন করে। ত্রিশ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার উদ্দিন, মুকুল মুখার্জি, আবদুর রব, অমর কুমার পুশি লাল, মো: ইউসুফ আলী, মো: আলমগীর হোসেন মোল্লা, মো: নুরুজ্জামান সহ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি হাসান মামুদ বাবু, বিসিসি ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সাঈদ আহম্মেদ মান্না, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি কাজল ঘোষ, জেলা পুজা উৎযাপন পরষিদের সাধারন সম্পাদক মানিক মুখার্জি কুন্ডুু, সমন্বয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক দেবাশীষ চক্রবর্তী, মহানগর পুজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি তমাল মালাকার, সাংস্কৃতিজন মিজানুর রহমান প্রমুখ। সভায় বক্তরা বলেন, বরিশালে উন্নয়ন হবে কিন্ত মুক্তিযোদ্ধোর স্মৃতি ধংশ করে নয়, ৩০ গোডাউন বধ্যভূমি এলাকায় মুক্তিযোদ্ধোকালিন অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে যা একটি কুচক্রি মহল মুছে ফেলতে চায়, আমরা বেঁচে থাকতে এহেন কর্মকান্ড হতে দিতে পারি না। বরিশাল নগর বাসীর উন্নয়নের স্বার্থে সাইলো নির্মান হোক, সেখানে যত ধরনের সহযোগীতা দরকার বরিশালবাসী করবে। কিন্ত মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি মুছে ফেলে এমন উন্নয়নের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তৎকালিন এডিসি শহীদ কাজী আজিজুল ইসলামের সমাধী স্থল এবং শতবর্ষি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ না কেটে ও পুকুর ভরাট না করে এ সকল উন্নয়ন কাজ হোক এমনটাই দাবী করে বক্তারা। উল্লেখ্য, নগরীর ত্রিশ গোডাউনের পাশে নদীসংলগ্ন এলাকায় ৫২০ শতক জমির ওপর ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইলো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল খাদ্য বিভাগ। এতে একসঙ্গে তিন বছরের জন্য ৪৮ হাজার টন চাল সংরক্ষণ করা যাবে। তবে ওই স্থানটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমি হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ নাগরিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো শুরুতেই সেখানে সাইলো নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছিল। তবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিজরিত এ বধ্যভূমি এলাকার সৌন্দর্য, দীঘিসহ সব জায়গা সংরক্ষণ রেখেই সাইলো নির্মাণের কথা থাকলেও বাস্তবে তা মানা হয়নি।