নগরীর গেইন ডায়াগনস্টিক মালিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের
দেশ জনপদ ডেস্ক|২২:২৩, জুলাই ০২ ২০২২ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন ওরফে বাবুল মোল্লা (৬২) নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার নিহতের ভাই কামাল উদ্দিন মোল্লা বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় এ মামলা করেন।
ঘটনার তিন দিন পরে শনিবার (০২ জুলাই) দুপুরের পর অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে নগরীর জর্ডন রোড এলাকার গেইন ডায়াগনস্টিক এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারের মালিক এস এম রফিকুল ইসলামকে। এছাড়া তার ভাই এসএম মুশফিকুর ইসলামের নাম উল্লেখ সহ আরো চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম। তিনি জানান, মামলায় বাদী অভিযোগ এনেছেন, রোগী ধরার দালাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন মিলে মারধর করে সাবেক কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন বাবুল মোল্লাকে। এতে গিয়াসউদ্দিন বাবুল মোল্লার মৃত্যু হয়। অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের পর এসআই মেহেদী হাসানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে সবকছিু বেড়িয়ে আসবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে সদর রোডের অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে গিয়াস উদ্দিন বাবুল মোল্লার লাশ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বরিশাল বিএনপি। ঘটনাটিকে ‘হত্যাকান্ড’ দাবি করে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান তারা। এদিকে হত্যা মামলা নিতে গড়িমসি করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা শনিবার (২ জুলাই) সকালে ফের বিক্ষোভ মানববন্ধন সহ ব্যাপক কর্মসূচীর ডাক দেন। বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের এমন হুংকারে শনিবার (০২ জুলাই) দুপুরের পর হত্যা মামলা রুজু করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।
এদিকে মামলার বাদী কালাম মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর পুলিশের সহায়তা চাওয়া হলেও তারা সহায়তা করেনি। এমনকি মামলা গ্রহণ নিয়ে টালবাহানা করেছে। অথচ আমার পিতা বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তিনি আসামিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। সচেতন নাগরীকের ব্যান্যারে বিএনপি আয়োজিত এই কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী।
বক্তারা বলেন, বাবুল মোল্লা দলমতের ঊর্ধ্বে একজন ভালো মানুষ। অথচ তাকে রোগী ধরার দালাল চক্র ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন মিলে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। অথচ পুলিশ নিরব ভূমিকায় রয়েছে। প্রশ্ন ওঠে পুলিশ কি তাহলে রোগীর দালাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে? তারা অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান। অন্যথায় আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডের গেইন ডায়াগনস্টিক এন্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারের রোগী ধরা দালালদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জের ধরে সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন বাবুল মোল্লাকে মারধর করা হয়। পরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দিয়ে চাপা দেয় দালালরা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।