প্রতারিত হয়ে যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৪১, জুন ২১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ পটুয়াখালীতে এক প্রতারকের ফাঁদে পড়ে রোমেন ঘরামী (৩০) নামে এক যুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। সামাজিকভাবে হেনস্তা ও টাকা দাবির চাপে পড়ে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর আগে রোমেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার সাড়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। রোমেন পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের রণজিৎ ঘরামীর বড় ছেলে। কসমেটিক ও প্রসাধনীর পরিবেশক ব্যবসায় নিয়োজিত ছিলেন রোমেন। মঙ্গলবার দুপুরে পোস্ট মর্টেম শেষে পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। রোমেনের মেঝভাই সোমেন ঘরামী ও ছোটভাই সুমন ঘরামী বলেন, রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রোমেনের ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে অপরিচিত ব্যক্তি কল দিয়ে জানায়, রোমেন বিষ খেয়ে গোলখালী নদীর পাড়ে চিৎকার করছে। খবর পেয়ে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে মোটরসাইকেলযোগে অসুস্থ রোমেনকে উদ্ধার করে প্রথমে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পৌঁছলে রোমেনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। দুই সহোদর আরও বলেন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় মিজান নামে এক ব্যক্তির নাম বারবার উল্লেখ করেছে রোমেন। কিন্তু মারাত্মক অসুস্থ থাকায় স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে তারা বলেন, সম্প্রতি একই এলাকার জনৈক নুরু খাঁর ছেলে মিজান খাঁ এর জন্য দায়ী। সদ্য সমাপ্ত হওয়া পটুয়াখালী শহরের শেখ রাসেল শিশুপার্কের পাশে বাণিজ্যমেলা চলাকালীন তার ভাই রোমেনকে ডেকে নেয় মিজান। মেলায় রোমেন গেলে অপরিচিত এক মেয়েকে দিয়ে জোর করে ভিডিও করে মিজান। এর পর থেকে মিজানের প্রতারণা শুরু হয়। এদিকে ঘটনার দিন বিকালে গোলখালী নদীর পাড়ে অসুস্থ অবস্থায় ছটফট করতে দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে রোমেন তাদের বলেন, ‘মিজান নামে এক যুবক শহরে নিয়ে অপরিচিত মাইয়ারে দিয়া জোর করে ভিডিও করে তা ফেসবুকে দেয় এবং দুই লাখ টাকা নেয়। পরে মিজান ফোন করে আরও টাকা দাবি করেন।’ যে কারণে রোমেন বিষ খেয়েছেন বলে তাদের জানায়। ওই সময়ে স্থানীয়দের করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে দশমিনা থানার ওসি মো. মেহেদি হাসান বলেন, উল্লিখিত ঘটনা লোকমুখে শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ পৌঁছানোর আগেই রোমেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পটুয়াখালী পাঠানো হয়। এ ছাড়া বিষয়টি কেউ অবহিত করেনি। যেহেতু পটুয়াখালী সদর থানার আওতায় তার মৃত্যু হয়েছে, তাই পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ দেখবে। মেয়েলি কোনো ঘটনা কেন্দ্র করে তাকে নাকি কেউ হয়রানি করেছে, এমনটি শুনেছি। কিন্তু কেউ অভিযোগ করেননি। তার পরও বিষয়টি আমরা অনুসন্ধান করছি। পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতারণার যে অভিযোগ সেটিও আমরা যাচাই করে দেখছি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে না।