পাথরঘাটায় খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধান ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৫০, জুন ২১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরগুনার পাথরঘাটা খাদ্য গুদামের ওসি-এলএসডির বিরুদ্ধে ধান ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারী বিধি মোতাবেক তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান ক্রয় না করে পাইকারদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে গুদামজাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে পাথরঘাটা উপজেলা খাদ্যগুদামে ৬৯৪ মেট্রিক টন আমন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ দেয়া হলে ৫৪৫ মেট্রিক টন ধান সরকারী বিধি মোতাবেক সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় না করে ধানের পাইকারদের কাছ থেকে নানা অনিয়মের ভিত্তিতে ক্রয় করেন ওসিএলএসডি আবুল কালাম আজাদ। সরেজমিনে জানা যায়, লটারিতে বিজয়ী কৃষকদের পাথরঘাটা খাদ্য গুদামে হাজির করে তাদের কাছ থেকে ছবি এবং ব্যাংকের চেকে স্বাক্ষর রেখে যাতায়াত বাবদ ৫'শ থেকে ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগও করেছেন একাধিক কৃষক। রায়হানপুর ইউনিয়নের বেতমোর গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান চৌকিদার বলেন, আমাকে এক লোক ফোন দিলে আমি খাদ্য গুদামে যাই। সেখানে চেকে স্বাক্ষর রেখে ১ হাজার টাকা দেয় আমাকে। আমি কোনো ধান দেইনি গুদামে। এর বেশি কিছু আমি জানি না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাথরঘাটা খাদ্য গুদামের একজন শ্রমিক বলেন, অনেক কৃষক গুদামে ধান দেয়নি। ওসিএলএসডি কালাম স্যার কৃষকদের গুদামে ডেকে এনে চেকে স্বাক্ষর রেখে যাতায়াত ভাড়া দিয়ে দেয়। ওই কৃষকদের নামের ধান রিপন খা, মজনু, সাইফুল, মজিবর মাষ্টার, জলিল, এবং শশধর নামের পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। চরদুয়ানীর ধান ব্যবসায়ী শশধরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একাই খাদ্যগুদামে ৩৫০ মেট্রিক টন ধান দিয়েছি, বাকিটা অন্য ব্যবসায়ীরা দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৃষকদের গুদামে ডেকে চেকে স্বাক্ষর রেখে পরবর্তীতে প্রতি কৃষকের নামে বরাদ্দ ৩ টন ধানের মূল্য ৮১ হাজার টাকা তাদের অগ্রনী ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তোলন করা হয়। খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কালাম আমার ৩ টন ধানের মূল্য ৮১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি অনেকবার তার কাছে এই টাকা চাইলে 'দিচ্ছি-দেবো' করে শেষে বলেন, পরবর্তীতে ব্যবসা বাণিজ্য করলে ওটা সেরে দেবো। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পাথরঘাটা খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ব্যবসার মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে। কোনো রকম দুই নম্বরি করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আবদুল হাকিম বলেন, অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন আল মুজাহিদ বলেন, 'ব্যাপারটি শুনলাম, তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।'