পুষ্টি গুনে সমৃদ্ধ ড্রাগন চাষে সফলতা
নিজস্ব প্রতিবেদক , বরিশাল ॥ ওষুধী ও পুষ্টি গুনে সমৃদ্ধ বিদেশী ফল ড্রাগন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সফলতা পেতে শুরু করেছেন আলমাস উদ্দিন নামের এক সৌখিন ব্যবসায়ী। তার ৮০ শতকের ড্রাগন বাগানে রোপিত প্রায় পাঁচ হাজার গাছের প্রতিটিতে এখন শোভা পাচ্ছে লাল ও হলুদ ড্রাগন ফল।
সহজ পদ্ধতিতে চাষাবাদ এবং রোগ-বালাই কম ও বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদা থাকায় বিদেশী এ ফল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এলাকার অন্যান্য সৌখিন কৃষকরা। ড্রাগন বাগানটির অবস্থান বরিশালের গৌরনদী উপজেলার আধুনা বটতলা এলাকায়।
ড্রাগন বাগানে পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা সুজন হোসেন বলেন, বিগত দেড় বছর পূর্বে ঢাকার ওষুধ ব্যবসায়ী আলমাস উদ্দিন তার (আলমাস) শ্বশুরের আধুনা বটতলা এলাকার পরিত্যক্ত উঁচু ৮০ শতক জমিতে পাঁচ হাজার ড্রাগন চারা রোপণ করেন। এতে তাদের গ্রামের তিনজনের কর্মসংস্থান হয়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যার পর চলতি বছর প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমান ড্রাগন ফল ধরেছে।
সৌখিন ব্যবসায়ী ও ড্রাগন বাগানের মালিক আলমাস উদ্দিন বলেন, ব্যবসার কাজে চিনে গিয়ে সেখানে প্রথম ড্রাগন চাষ দেখে আমি উৎসাহিত হই। পরবর্তীতে শখের বসে লাল, হলুদ ও সাদা তিন প্রকারে ড্রাগন চারা সংগ্রহ করি। ওই চারাগুলো শ্বশুরের পরিত্যক্ত ৮০ শতক জমির উপর বেড তৈরি করে রোপণ করি। তিনি আরও বলেন, বেড তৈরি থেকে শুরু করে চারা রোপন ও গাছের পরিচর্যায় এ যাবত প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ড্রাগন বাগানের প্রতিটি গাছে ফুল আসতে শুরু করে, পরবর্তীতে প্রচুর পরিমান ড্রাগন ফল ধরেছে। পর্যায়ক্রমে এর ফলন বৃদ্ধি পাবে। আলমাস উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যে বাগানের ড্রাগন ফল বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাজারে মৌসুমী ফল ভরপুর থাকায় প্রতিকেজি ড্রাগন পাইকারী ৩০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মামুনুর রহমান বলেন, ড্রাগন বিদেশী ফল হলেও বর্তমানে আমাদের দেশে ড্রাগনের চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত, ফিবার, ফ্যাট, ক্যারোটিণ, ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৯ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটি ড্রাগন ফলে ৬০ ক্যালোরিশক্তি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, বিটাক্যারোটিন ও লাইকোপিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধে ড্রাগন ফল খুবই কার্যকরী।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষক ও খামারীদের বিদেশী ফল চাষের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে পারলে একদিকে যেমন বিদেশী ফলের আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে, তেমনি করে ফল চাষের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন।