শিশু পুত্রকে গলা টিপে হত্যা করে মায়ের পরকীয়া প্রেমিক

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৫৭, জুন ০৩ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক , বরিশাল ॥ পরকীয়া প্রেমিকের সাথে মায়ের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় আট বছরের শিশু পুত্র দীপ্ত মন্ডলকে মায়ের সামনে বসেই গলা টিপে হত্যা করে পরকীয়া প্রেমিক। বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকের কাছে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক পরকীয়া প্রেমিকসহ নিহত শিশুর মা সীমা মন্ডল। আজ শুক্রবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ঘাতকদের দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দির উদ্বৃতি দিয়ে উজিরপুর মডেল থানার ওসি মোঃ আলী আর্শাদ বলেন, গত ২৭ মে হারতা ইউনিয়নের কাজীবাড়ি গ্রামের দীপক মন্ডলের আট বছরের শিশু পুত্র তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র দীপ্ত মন্ডল তার বাবা-মায়ের সাথে হারতা বাজারে কীর্ত্তন অনুষ্ঠানে যায়। রাত ১১টার দিকে দীপ্তর মা সীমা মন্ডল তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীলের সাথে সেলুনের শার্টার আটকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। দীপ্ত তার মাকে খুঁজতে গিয়ে নয়ন শীলের সেলুনের শার্টার টেনে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। এ সময় পরকীয়ার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে সীমা মন্ডলের সামনে বসেই তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীল গলা টিপে দীপ্তকে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ সেলুনে বসার জন্য কাঠের তৈরি সিটের ভেতর লুকিয়ে রাখা হয়। দুইদিন সিটের ভেতর থাকায় লাশটিতে পচন ধরে। পরবর্তীতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরায় ২৯ মে রাতে বস্তাবন্দী লাশ মাছের ড্রামে ভরে সেলুন মালিক রতন বিশ্বাসের ভাই ভ্যানচালক জীবন বিশ্বাসকে নিয়ে ইভা মল্লিক, নয়ন শীল ও রতন বিশ্বাস অদূরের একটি খালে ফেলে দেয়। ওসি আরও জানান, দীপ্ত নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবা ২৮ মে উজিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। অপরদিকে দীপ্ত নিখোঁজের পর থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কতিপয় লোকজনে দীপক মন্ডলের ধর্ম ভাই হারতা বন্দরের সেলুন কর্মচারী নয়ন শীলকে সন্দেহের তালিকায় রাখে। এরইমধ্যে গত ৩০ মে গভীর রাতে নয়ন তার রক্তমাখা সেলুনের দোকানটি ধৌত করার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। অভিযুক্ত নয়নের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সেলুনের মালিক রতন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ইভা মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে থানা পুলিশ গত ৩১ মে খাল থেকে বস্তাবন্দি দীপ্ত মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃত সেলুন মালিকের স্ত্রী ইভা মল্লিক জানান, তাদের দোকানের কর্মচারী নয়ন শীলের সাথে নিহত শিশু দীপ্ত মন্ডলের মা সীমা মন্ডলের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ার সম্পর্কের কারণেই এ হত্যাকান্ড হয়েছে। দীপ্ত মন্ডলের লাশ উদ্ধারের পর নিহত শিশুর বাবা দীপক মন্ডল বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে ৩১ মে রাতে উজিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় নিহত শিশুর মা সীমা মন্ডলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আদালতে সীমা মন্ডল ও তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন শীল হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পাশাপাশি লাশ লুকাতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেছেন রতন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ইভা মল্লিক।