টিনের ঘরে থাকতে চান আনসার

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:৩০, জুন ০১ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরগুনার তালতলী উপজেলায় একটি ঘরের আশায় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধা আনসার ফকির (৭০)। তালতলী উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মোমিশিপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, রেকর্ডিও জমি না থাকায় আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করেন আনসার। সন্তানাদি না থাকায় অত্যন্ত বয়স্ক হাওয়ায় ভিক্ষাবৃত্তি করে স্ত্রী নুরজাহানকে (৬৫) নিয়ে জীবনযাপন করছেন তিনি। নিষ্ঠুর রোগাক্রান্তের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় আছেন স্ত্রী নুরজাহান। অন্যদিকে তিনি নিজেও অসুস্থ। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া আর কোন রোজগার নেই আনসারের। সারা দিন ভিক্ষাবৃত্তি করে বাড়িতে এসে রান্না-বান্না করে খাওয়ান স্ত্রীকে। একদিকে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন আনসার অন্যদিকে সামনে বর্ষাকাল। সরকারি খাস জমিতে একটি ঝুপড়ি দাঁড়িয়ে থাকলেও তাতে নেই কোন বেড়া। সব সময় ভয় হয় কখন জানি ভেঙে পড়ে বেড়াবিহীন ওই ঝুপড়ি। অশ্রু ভেজা কণ্ঠ নিয়ে আনসার ফকির বলেন, মোর কোন পোলাপান নাই। মুই আর মোর বউ ছাড়া আপন বলতে এই দুন্নইতে কেউ নাই। দুই বছর ধইররা বউর অসুখ। বেমালা দিন ধইররা বিছনা লগইত। ঘর দুহারও নাই। সামনে বর্ষার দিন। মুই সবাইর ধারে সাহায্য চাই। মোর ঘরে বেড়াও নাই। এ বিষয়ে বড়বগী ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোসা. জোসনা জানান, সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। আমার এই ইউনিয়নের ভেতর সব থেকে অসহায় হচ্ছেন আনসার। তিনি ভূমিহীন। খাস জমিতে জরাজীর্ণ ঘরে থাকেন তিনি। তাকে একটি ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছি। আমাদের সবার অনুরোধ ঝড়-বৃষ্টি থেকে নিরাপদে থাকার জন্য তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক অথবা কেউ যদি ওনাকে টিনের ব্যবস্থা করে দেন পরের বাকি খরচ আমি বহন করবো। তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম সাদিক তানভীর  বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছেন। তার কাগজপত্র আমার কাছে পাঠিয়ে দিন। আমি খোঁজ-খবর নেবো। তিনি যদি সরকারি ঘর পাওয়ার উপযোগী হয়ে থাকেন অবশ্যই তাকে ঘর দেওয়া হবে।