সিরাজুলের ঘোড়া হত্যা করল কে ? শত্রুতা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ সিরাজুল বলেন, ‘ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে ঘোড়াগুলো রাখতাম। তার পাশেই নজরুল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে তর্ক হয়। তখন নজরুল আমাকে ধমক দিয়ে বলেছে, আমাকে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসা করতে দিবে না, কী করে ঘোড়া পালি সেটা সে দেখিয়ে দেবে।’
ঝালকাঠি পৌর খেয়াঘাট এলাকার তরুণ সিরাজুল ইসলাম। দেড় বছর ধরে পালন করছেন ঘোড়া। ঘোড়দৌড় আর গাড়ি চালানোর জন্য তার আস্তাবলে রয়েছে ছয়টি তরতাজা ঘোড়া। যার দুটি দিয়ে চালান গাড়ি, যা তার আয়ের অন্যতম উৎস। আর দুটি দিয়ে গ্রাম্য ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা করেন সিরাজুল।
তার ঘোড়ার গাড়ি ঝালকাঠিতে বেশ জনপ্রিয়। বিয়ে, শো-ডাউন, ঘুরতে যাওয়াসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দিয়ে পয়সা রোজগার করেন সিরাজুল।গাড়ি টানার জন্য পালন করা তার দুটি ঘোড়ার একটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সিরাজুল।
তার অভিযোগ, তার সঙ্গে কথাকাটাকাটির একটা পর্যায়ে আস্তাবলের পাশে বাস করা নজরুল তার ঘোড়া হত্যার হুমকি দেয়। পরে তার একটি ঘোড়া বিষপ্রয়োগ ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়।
সিরাজুল বলেন, ‘ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে ঘোড়াগুলো রাখতাম। তার পাশেই নজরুল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শুক্রবার রাতে আমার সাথে তর্ক হয়। তখন নজরুল আমাকে ধমক দিয়ে বলেছে, আমাকে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসা করতে দিবে না, কী করে ঘোড়া পালি সেটা সে দেখিয়ে দেবে।’
সিরাজুল আরও বলেন, ‘শনিবার সকালে ঘোড়া দুটো শিশুপার্কের মাঠে বেঁধে রেখে বাসায় যাই। দুপুর আড়াইটার দিকে ঘোড়া আনতে গিয়ে দেখি একটি ঘোড়া মৃত অবস্থায় মাঠে পড়ে আছে। দেখি ঘোড়াটির শরীরে পেটানো ও পায়ের রগ কাটার চিহ্ন।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় পশু চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে পারিনি।’ সিরাজুলের দাবি, তার ঘোড়াকে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে হত্যা করেছে নজরুল।
শনিবার বিকেলে প্রাণি হত্যার বিচারের দাবিতে মৃত ঘোড়া ভ্যানে তুলে সদর থানায় নিয়ে যান সিরাজুল। তিনি পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। বলেন, নজরুল ইসলাম তার ঘোড়া হত্যা করেছেন। পরে সদর থানা পুলিশের পরামর্শে সন্ধ্যা ৬টায় ঘোড়াটিকে পৌর কসাইখানা সংলগ্ন সুগন্ধা নদীর পাড়ে মাটিচাপা দেন সিরাজুল।
ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে সিরাজুলের ঘোড়া রাখার ঘরে গিয়ে দেখা যায়, ওই ঘরটির পাশেই অভিযুক্ত নজরুলের একটি গোয়ালঘর রয়েছে। প্রায়ই গরুর দড়ি না পেয়ে সিরাজুলকে দোষারোপ করতেন নজরুল।
ঘোড়া হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘোড়ার মৃত্যু সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।’
ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সিরাজুলকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি, অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রে ঘোড়ার ময়নাতদন্ত করতে হবে।’