২ সেতুর মালামাল ‘বেচে দিলেন চেয়ারম্যান’
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ঝালকাঠি সদর থানার এসআই খোকন বলেন, ‘সোমবার বিকেলে গোপন তথ্যে পোনাবালিয়া খেয়াঘাটে যাই। সেখান থেকে সরকারি সেতুর লোহার ১১টি রড, ৫টি ছোট বিম, ২০টি অ্যাঙ্গেলসহ একটি ট্রাক জব্দ করে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসি।’
ঝালকাঠি সদরের পোনাবালিয়া ইউনিয়নে দুটি লোহার সেতুর মালামাল ভাঙারির কাছে বেচে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে।
সোমবার ট্রাকে তুলে ওই মালামাল পাচারের সময় জব্দ করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি, কেউ গ্রেপ্তারও হননি।
স্থানীয়রা জানান, পোনাবালিয়া ইউনিয়নে নয়াখালের ওপর এবং আলমগীর হাওলাদারের বাড়ির সামনে খালে লোহার সেতু দুটি ভেঙে পড়লে চলতি বছর নতুন করে নির্মাণ করে দেয় এলজিইডি। পুরোনো সেতু দুটির লোহার মালামাল খুলে ইউপি চেয়ারম্যান নিজ বাড়িতে নিয়ে যান।
সোমবার দুপুরে সেতুর মালামাল ট্রাকে তুলে নলছিটি নিয়ে যাচ্ছিলেন ভাঙারি ব্যবসায়ী। এ সময় পোনাবালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় স্থানীয় লোকজন ট্রাকটি আটক করে পুলিশে দেন।
মালামাল আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন। তিনি বলেন, ‘সোমবার বিকেলে গোপনে তথ্য পেয়ে পোনাবালিয়া খেয়াঘাটে যাই। সেখান থেকে সরকারি সেতুর লোহার ১১টি রড, ৫টি ছোট বিম, ২০টি অ্যাঙ্গেলসহ একটি ট্রাক জব্দ করে ঝালকাঠি থানায় নিয়ে আসি।’
চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে সেতুর মালামাল অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নান্না খলিফা।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান আবুল বাসার পুরোনো সেতুর লোহার মালামাল বেশ কিছুদিন আগে নিজ বাড়িতে রেখেছিলেন। সোমবার গোপনে ভাঙারিদের কাছে সেসব বিক্রি করে দেন। মালগুলো ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে জব্দ করে।’
সেতুর মালামাল কেনা ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. মুনছুর বলেন, ‘পোনাবালিয়ার চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান আমাকে ডেকে কিছু মালামাল বিক্রির কথা বলেন। আমি ৬৭ হাজার ৫০০ টাকায় সেতুর লোহার মালামাল কিনেছি।
‘তার গ্রামের বাড়ির পাশের একটি খোলা জায়গায় রাখা মালামাল ট্রাকে তুলে নলছিটি যাচ্ছিলাম। স্থানীয় লোকজন আমার ট্রাক ধরে পুলিশে দিয়েছে। ঘটনার পর চেয়ারম্যান আমার ফোন ধরেন না।’
গ্রাম পুলিশ মিন্টু হাওলাদার বলেন, ‘পুরোনো সেতুর মালামাল চেয়ারম্যানের বাড়িতেই ছিল। সেগুলো কীভাবে বাইরে এলো, জানা নেই।’
দুটি পুরোনো সেতুর মালামাল জব্দ করার এক দিন পেরিয়ে গেলেও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত কেউ আটক হননি, মামলাও হয়নি।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভাঙারি ব্যবসায়ী মুনছুরকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।’
এ বিষয়ে পোনাবালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান বলেন, ‘আমার কাছে সেতুর মালামাল ছিল না, আমি এগুলো বিক্রিও করিনি। একটি চক্র আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’