ভোলার ডবল মার্ডার মামলায় ২ জনের ফাঁসি
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ভোলার চাঞ্চল্যকর ডবল মার্ডার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মামলার প্রধান আসামি মামুনুর রশিদ মামুন এবং তার সহযোগী মো. ফিরোজকে (পলাতক) ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মামুনের ছেলে শরীফকে যাবজ্জীবন এবং মানুনের অপর ছেলে আরিফ ও স্ত্রী রেহানা বেগমকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক এই রায় ঘোষণা করেছেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট স্বাপন কৃষ্ণ দের অফিসসূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র এবং মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ভোলা জেলা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোস্তফা স্যারের মৃত্যুর পর পৈত্রিক জমি জমার বিরোধকে কেন্দ্র করে মামুন এবং তার ছোট ভাই মাসুমের সাথে বিরোধ বাধে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ১৩ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাপ্তা ভোটের ঘর এলাকায় তাদের বসত বাড়ির সামনে মামুন ও তার সহযোগী ফিরোজ ধরালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে প্রথমে তার ছোট ভাই মাসুমকে হত্যা করে। এ সময় সংবাদ পেয়ে মাসুমের শ্যালক জাহিদ এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু জাহিদকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত জাহিদের পিতা এবং অপর নিহত মাসুমের শ্বশুর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ো ভোলা থানায় ৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে হত্যার পরপরই মামলার প্রধান দুই আসামী মামুন এবং ফিরোজ পালিয়ে যায়। অপর তিন আসামি মামুনের স্ত্রী রেহানা বেগম এবং দুই ছেলে শরীফ ও আরিফকে পুলিশ গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর মামলার ১ নম্বর আসামী মামুনকে পাবনা জেলা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু দ্বিতীয় আসামি ফিরোজ এখনো পলাতক রয়েছে।
দীর্ঘদিন শুনানী এবং ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ গ্রহণ শেষে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: মহসিনুল হক আজ বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন। এতে মামলার প্রধান আসামী মামুনুর রশিদ মামুন এবং মামুনের বন্ধু মো. ফিরোজকে মৃত্যুদন্ড সেই সাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জারিমানা এবং মামুনের ছেলে শরীফকে যাবজ্জীবন সেই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছে। অপর আসামী মামুনের স্ত্রী রেহানা বেগম এবং অপর ছেলে আরিফকে খালাস দেয়া হয়েছে।
এই মামলায় সরকার পক্ষে ছিলেন পিপি এ্যাডভোকেট সৈয়দ আশ্রাফ হোসেন লাবু এবং এ্যাডভোকেট স্বাপন কৃষ্ণ দে। অপর দিকে আসামী পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট অতীন্দ্র নাথ ব্যানার্জি। রায়ের পর আসামী পক্ষের আইনজীবী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেন নি। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
এদিকে মামলার বাদী নিহত জাহিদের বাবা এবং নিহত মাসুমের শ্বশুর মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে এবং জামাতাকে হত্যা করেছে। তিনি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।