কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ও স্ক্রিনিং
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ মার্চ কোলোরেকটাল ক্যানসার সচেতনতা মাস। কোলোরেকটাল ক্যানসার বলতে বৃহদন্ত্র থেকে মলদ্বার পর্যন্ত অংশের ক্যানসারকে বোঝায়। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির মতে, প্রতি ২১ জন পুরুষের মধ্যে ১ জন এই ক্যানসারের ঝুঁকিতে আছেন এবং ক্যানসারের মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ এটি। নিয়মমতো স্ক্রিনিং করলে এর ভয়াবহতা থেকে বাঁচা সম্ভব। স্ক্রিনিং হলো শুরুতেই শনাক্ত করার জন্য সুস্থ–অসুস্থ সবার মধ্যে অনুসন্ধান চালানো। আমাদের দেশে স্ক্রিনিং পদ্ধতি এমনকি সচেতন মহলেও চালু হয়নি। তাই অনেকেরই কোলন ক্যানসার শুরুতে শনাক্ত হয় না। অথচ শুরুতেই শনাক্ত হলে এর থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
ক্যানসারের ঝুঁকি
সাধারণ ঝুঁকি: ৪৫ বছরের বেশি বয়স; ধূমপান ও মদ্যপান; স্থূলতা; উচ্চ প্রাণিজ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ; আঁশজাতীয় খাবার কম খাওয়া ও শারীরিক শ্রম কম করা। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, সেলেনিয়াম ও ভিটামিন ই–এর ঘাটতি এই ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
উচ্চ ঝুঁকি: যাঁদের পারিবারিক ইতিহাস আছে; কোলোন বা রেকটামে পলিপ থাকার ইতিহাস; যাঁদের আইবিডি বা অন্ত্রে প্রদাহজনিত রোগ আছে, যাঁদের জিনগত সমস্যা আছে।
স্ক্রিনিং পদ্ধতি
সাধারণদের জন্য: কোলোনস্কপি করা উচিত ৫০ বছর বয়সে শুরু করে প্রতি ১০ বছরে একবার অথবা মলের ওবিটি বছরে একবার বা মলের ডিএনএ তিন বছর পরপর।
যাঁদের পারিবারিক ইতিহাস আছে: কোলোনস্কপি করা উচিত ৪০-৪৫ বছর বয়সে শুরু করে ১ থেকে ৫ বছর পরপর। আইবিডি আছে যাঁদের, তাঁরা রোগ শুরুর ৮ বছর পর শুরু করে ১ থেকে ২ বছর পরপর কোলোনস্কপি করবেন। জিনগত সমস্যা থাকলে ২০-২৫ বছর বয়সে শুরু করে ১ থেকে ২ বছর পরপর কোলোনস্কপি করা উচিত।
প্রতিরোধে জীবনযাত্রার পরিবর্তন
প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ কমানো; আঁশযুক্ত শাকসবজি ও ফলমূল বেশি খাওয়া; ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার; লাল মাংস কম খাওয়া; শারীরিক শ্রম বাড়ানো; সম্ভব হলে ব্যায়াম করা; ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। চিকিৎসকের পরামর্শমতো এসপিরিন–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া নিশ্চিত করা।
ডা. আ ন ম মঈনুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, রেডিওথেরাপি (ক্যানসার চিকিৎসা) বিভাগ, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল