এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পাবে হাদিসুরের পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘যেকোনো মেরিনার জাহাজে যেতে হলে একটি এগ্রিমেন্ট ফিলাপ করা হয়। এই এগ্রিমেন্টের আওতায় জাহাজে কর্মরত কোনো নাবিক যদি মারা যায় বা ডিজেবল হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। যেহেতু হাদিসুর রহমান মারা গেছেন, সে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পাবে।’
ইউক্রেনে হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করা এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের পরিবারকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমি ও স্থানীয় এমপি। সেই সঙ্গে তার পরিবারকে এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথাও জানানো হয়।
মঙ্গলবার নিহত হাদিসুরের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দাফন শেষে তারা এ আশ্বাস দেন।গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারান জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার দুপুর সোয়া ১২টা ২০ তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে। রাত ১০টায় হাদিসুরের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জানাজা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় মসজিদের সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে হাদিসুরকে দাফন করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘যেকোনো মেরিনার জাহাজে যেতে হলে একটি এগ্রিমেন্ট ফিলাপ করা হয়। এই এগ্রিমেন্টের আওতায় জাহাজে কর্মরত কোনো নাবিক যদি মারা যায় বা ডিজেবল হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। যেহেতু হাদিসুর রহমান মারা গেছেন, সে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পাবে। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সে ক্ষতিপূরণ পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাহাজের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমরা জাহাজের কথা চিন্তা না করে সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছি। আমরা হাদিসুরের পরিবারের পাশে থাকব। তাদের জন্য সব সহায়তা আমরা অব্যহত রাখব।’
হাদিসুরের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিলেন মেরিন অ্যাকাডেমি বরিশালের কমান্ডেন্ট ক্যাপ্টেন আতিকুর রহমান। বলেন, ‘যারা দেশের জন্য, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা করেছিল, তাদের পরিবারের জন্য সরকার সহায়তা করবে এটা খুবই স্বাভাবিক।
‘সরকারের আন্তরিকতা ছিল, সে কারণেই মরদেহ নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। আমি সরকারের কোনো আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি দেখিনি।’
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু মঙ্গলবার সকালে নিহত হাদিসুরের দাফন শেষে বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ব্যথিত হয়েছেন। আমরা আশা করি যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে হাদিসুর রহমান চাকরি করতেন, অবশ্যই সেই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তার পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে। ‘আমরা দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে তাদের পরিবারের পাশে থাকব।’