নগরবাসীকে শঙ্কামুক্ত রাখতে করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে নগর পুলিশ

কামরুন নাহার | ২০:১৪, এপ্রিল ০১ ২০২০ মিনিট

এস.এন.পলাশ ॥ আতংক নয়, করোনা থেকে নগরবাসীকে শঙ্কামুক্ত রাখতে সচেতনতাসহ নানা ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। বিশ্বজুড়ে যখন করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) আতংকের রুপ নিয়েছে তখন থেকেই লক্ষ্য করা গেছে নগর পুলিশের সমাজসেবামূলক নানান পদক্ষেপ। জনগনের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি, নগরীতে প্রতিদিনই করা হচ্ছে জীবানুনাশক স্প্রে, বাজার মনিটারিং, মটরসাইকেল টিম দিয়ে সার্বক্ষনিক তদারকির পাশাপাশি সদ্য দেশে আসা প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টেইন নিশ্চিত করাসহ অনেক বিষয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিটা সদস্য। পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান’র নির্দেশক্রমে নগরীর বিভিন্ন অলি-গলিতে জনসাধারণকে ঘরে অবস্থান করার অনুরোধসহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয় বর্জনীয় পরামর্শ নিয়ে বিএমপি’র উত্তর ও দক্ষিণ বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট থানার অফিসারবৃন্দ’র সক্রিয় অংশগ্রহণে চলছে নিয়মিত মহড়া। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সড়কে টহল বাড়িয়েছে বরিশাল মহানগর পুলিশ (বিএমপি)। ঘর ছেড়ে প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত কয়েকদিন সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যেসব সড়কে গত কয়েকদিনে পুলিশের টহল ছিল না সেসব সড়কেও পুলিশের কর্মকাণ্ড বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বলেন, জনগনকে ঘরে রাখতে বিশেষ করে নগরীর বাজারগুলোর ভীড় কমাতে আমাদের আরেকটু ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে এগোতে হবে। পাশাপাশি জনগনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ঘরে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে যাতে জনগন ঘরে থাকতে অভ্যস্থ হয়। এছাড়া আগামীকাল পুলিশের পক্ষ থেকে ১শ পরিবারকে ত্রান সামগ্রী বিতারন করা হবে। নগরবাসীকে করোনার ছোবল থেকে রক্ষা করতে সকল কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এদিকে সরেজমিন সূত্রে বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘূরে দেখা গেছে, করোনা সংক্রামন থেকে রক্ষায় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মানছেন না কেউ। এই সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শারীরিকভাবে একে অন্যের তিন ফুট দূরত্বে অবস্থান করতে বলা হলেও সেটা মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। তবে প্রশাসন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে পারছে না। এ বিষয়ে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা জনগনকে বাসায় থাকার সকল কার্যক্রম ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সকলের প্রতি অনুরোধ আপনারা জরুরি কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের হবেন না। তিনি আরও বলেন, পুলিশের পাশাপাশি সকলের সন্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে করোনো থেকে মুক্ত রাখতে। অপরদিকে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজিমুল করিম বলেন, কমিশনার স্যারের নির্দেশেই আমার কাউনিয়া থানা এলাকায় ওভার পের্ট্রোলিং, মাইকিং, হাতধোয়া কার্যক্রম, ও জনগনকে বিভক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও করোনা সচেতনতায় সোসাল মিডিয়ায় সার্বক্ষনিক কাজ করছেন মেট্রোপলিটন এলাকার সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ একাধিক সদস্য। বিএমপি মিডিয়া সেল থেকেও সার্বক্ষনিক প্রচার করছেন নগর পুলিশ। এদিকে বিএমপি’র নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজও পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান’র নির্দেশক্রমে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক করোনা প্রতিরোধে মোটরযান ও বিভিন্ন যানবাহনে সচেতনতামূলক স্টিকার, লিফলেট বিতরণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণ সুরক্ষায় সকল নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পারলে আমরা এই মহামারি থেকে বাঁচতে পারি। আমরা নিজেদের নিরাপদ রেখে অন্যদের নিরাপদ রাখার জন্যে যে যাঁর অবস্থান থেকে চেষ্টা চলমান রাখবো। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম, উপ-পুলিশ কমিশনার সদর দপ্তর আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ, উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার ডিবি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নগর বিশেষ শাখা সালেহ উদ্দিন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস্টেট এন্ড পিএমটি রুনা লায়লা, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক মোহাম্মদ জাকারিয়া রহমান, সহকারী পুলিশ কমিশনার স্টাফ অফিসার মোঃ আঃ হালিম, সহকারী পুলিশ কমিশনার ক্রাইম এন্ড প্রসিকিউশন মোঃ মতিউর রহমান, সহকারী পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক এন্ড ফোর্স মোঃ মাসুদ রানা, সহকারী পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক মোঃ ফাইয়েজুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।