নিজস্ব প্রতিবেদক॥ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে বরিশালে আগামীকাল মঙ্গলবার মহানগর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ। সমাবেশ সফল করতে ওয়ার্ড পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে প্রস্তুতি সভা করেছে নেতৃবৃন্দ। তবে ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দকে পাশ কাটিয়ে মহানগর বিএনপি নেতারা খেয়াল-খুশি মতো তাদের অনুসারীদের নিয়ে সভা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে মহানগরের আওতাধীন বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতাদের। ওয়ার্ড নেতাদের পাশ কাটিয়ে অন্যদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা অসাংগঠনিক বলে দাবি করেছেন মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে সোমবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ছিলো বিএনপি’র। কিন্তু চরমোনাই দরবার শরীফের ৩ দিনব্যাপী মাহফিলের কারণে বরিশাল মহানগর বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার (১ মার্চ) সকাল ১০টায় দলীয় কার্যালয় চত্বরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে গত কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে ওয়ার্ড নেতাদের সাথে প্রস্তুতি সভা করেছেন মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ অন্যান্য নেতারা। কিন্তু ২৩, ২৪ ও ২৫ নম্বরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের পাশ কাটিয়ে মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির নেতারা তাদের অনুসারীদের নিয়ে সভা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক বাবুল হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মামলা-হামলা ও কারাবরণ সহ্য করে দলের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন তিনিসহ অন্য ওয়ার্ড নেতারা। মহানগর বিএনপি’র নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পরও মহানগরের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন তারা। এরপরও ১ মার্চের বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রস্তুতি সভায় ডাকা হয়নি তাদের। তারা যাদের নিয়ে সভা করেছে তারা বর্তমান ওয়ার্ড কমিটির কোনো পদেও নেই। বর্তমান কমিটি পাশ কাটিয়ে অন্যদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। একই কথা বলেছেন মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতারা।
মহানগর বিএনপি’র একাধিক যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব অন্য যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। কিন্তু আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব যুগ্ম আহ্বায়কদের পাশ কাটিয়ে নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যুগ্ম আহ্বায়ক কারও মতামত নেন না তারা। এছাড়া বর্তমান ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের পাশ কাটিয়ে তাদের অনুসারী যারা কোন পদে নেই তাদের নিয়ে অগঠনতান্ত্রিকভাবে প্রস্তুতি সভা করেছেন তারা।
মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর না দিয়ে নানা যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন।
মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল বলেন, কোনো ওয়ার্ডে যদি বিএনপি’র কমিটি থাকে বা ওয়ার্ড নেতারা যদি সক্রিয় থাকে তাহলে তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের নিয়ে ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করা অসাংগঠনিক এবং অযৌক্তিক।
মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে সকল ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। সভার আগে সদস্য সচিব মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে বা লোক মারফত সকল ওয়ার্ডে খবর পাঠিয়েছেন। কিন্তু ওয়ার্ডের প্রস্তুতি সভায় কেউ এসেছেন আবার অনেকে আসেননি। আবার অনেকে জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়ার্ড নেতাদের দলের কার্যক্রমে আসতে মানা করে। তারপরও যারা দলের কর্মসূচিতে আসেন না তাদের দলে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।