৫২ বছর ধরে দড়ি টেনে নৌকা পারাপার

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৩৩, ফেব্রুয়ারি ২৭ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥  যশোরের কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদে চিংড়া-সারসা খেয়াঘাটে ৫২ বছর ধরে দড়ি টেনে নৌকায় সাধারণ মানুষকে পারাপার করছেন জগদীস দাস। বাবা হাজারী লাল দাসের হাত ধরে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি দড়ি টানা কাজে নামেন। এতে এখন তার প্রতিদিন আয় হয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কষ্টের মধ্যে সংসার চালাতে হয় তার। নদ পাড়ের সারসা গ্রামে তার বসবাস। নৌকায় খেয়া পারাপারের কাজ জগদীস দাসের তিন পুরুষের। দীর্ঘ ১০০ বছর ধরে পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করছেন। কপোতাক্ষ নদের চিংড়া-সারসা ঘাটে সকাল থেকে অধিক রাত পর্যন্ত দড়ি টেনে এ পরিবার এলাকাবাসীকে নদ পারাপারে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বর্তমানে কপোতাক্ষ নদে ৫২ বছর ধরে দড়ি টেনে যাচ্ছেন জগদীস দাস। তিনি বলেন, প্রায় ৫২ বছর দড়ি টেনে নদে খেয়া পারাপারে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করলেও এখন আর সংসার চালানো কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এক সময়ের খরস্রোতা কপোতাক্ষ নদে এখন তেমন স্রোত নেই। তীব্র স্রোত বহমান সময়ে বাবা হাজারী লাল দাসের হাত ধরেই দড়ি টেনে খেয়া পারাপার করতে শেখেন। তখন যা আয় হতো তাতে সংসার চলেও কিছু সাশ্রয় করা যেত। এখন স্রোত নেই। খেয়া পারাপারে মানুষের যাতায়াতও কমে গেছে। সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দড়ি টেনে খেয়া পারের কাজ করেও ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি আয় হয় না। সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে নিত্যানন্দ দাস ও ছোট মেয়ে পূজা দাসকে লেখাপড়া শেখানোর জন্য তাকে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এ কাজ করে তিনি ২টি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। সংসারে তার ছেলে নিত্যানন্দ দাস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছেন। ছোট মেয়ে পূজা দাস সাগরদাঁড়ি আবু শারাফ সাদেক কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। জগদীস দাসের বসবাস কপোতাক্ষ পারের সারসা গ্রামে। পারাপারে আয় রোজগার কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে তাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট স্বীকার করতে হচ্ছে। ঐ পরিবারের সদস্য নিত্যানন্দ দাস জানান, তাদের পূর্বপুরুষরা প্রায় ১০০ বছর ধরে এ কাজ করছেন। এখন তারা এ কাজ করতে চান না। তাই এ খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণ হোক সেটাই তার দাবি।