নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিআইডব্লিউটি’র অসাধু কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে চলছে বরিশাল সদর লাহারহাট টু ভেদুরিয়া ফেরি ঘাটে নিরবে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। ফেরিঘাটে বিআইডব্লিউটি’র টার্মিনাল পার্কিং এর নামে হাজার হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি অপু ও সাধারণ সম্পাদক সুজনের বিরুদ্ধে। সরকারি পাকিং চার্জের বাহিরে দৈনিক হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষাধিক টাকা। চলতি বছরের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ইজারাদার অপু বিআইডব্লিউটি’র নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ গাড়ির ধরনভেদে ৭৫/৪০/১৫ টাকার পরিবর্তে আদায় করছে ২০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত। আর প্রত্যক্ষ এ চাঁদাবাজি ধরে রাখতে ইজারার নিয়ম ভঙ্গ করে টার্মিনালে পার্কিং চার্জ সংক্রান্ত সাইনবোর্ডও লাগায়নি ফেরিঘাটে। মাসতুতো ভাই নীতিতে চুপশে আছেন বরিশাল আধুনিক নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু। কিন্তু এ ব্যাপারে তিনি বলেন, টার্মিনাল চার্জ নেয়ার বিধান রয়েছে এবং নির্ধারনও করা রয়েছে। গাড়ির ধরনভেদে ৭৫/৪০/১৫ টাকা মাত্র। কিন্তু শুরু থেকে ইজারাদার বাড়তি টার্মিনাল চার্জ আদায়ের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিলো তা কেন দৃষ্টিগোচর হয়নি? এমনকি অবৈধভাবে ওই ইজারাদার ২০০/ ১০০/ ৫০০/ ৯০০ টাকা আদায়ের রশিদ বিআইডব্লিউটি’র নামে ছাপিয়ে ব্যবহার করছে তাও কেন দেখতে পান না জানতে চাইলে, বন্দর কর্মকর্তা এর কোন সদউত্তর দিতে সমর্থ হননি। এদিকে সরেজমিন সূত্রে, লাহারহাট ভেদুরিয়া রুটে প্রতি ২৪ ঘন্টায় ছোট, বড়, মাঝারী ধরনের পিকআপ, ট্রাক, লরিসহ অন্যান্য পরিবহন আসা যাওয়া করে। এ সময় বিআইডব্লিউটি’র জায়গা ব্যবহার করে ফেরিতে উঠতে হয়। আর এ কারনে গাড়ি প্রতি ১৫ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত টার্মিনাল চার্জ নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ইজারাদার নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়। এতে বড় ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস, লরি থেকে দৈনিক অতিরিক্ত আদায় করে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং ছোট ও মাঝারীসহ অন্যান্য গাড়ি থেকে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা। এ ব্যাপারে ইজারাদার শওকত হোসেন অপু বলেন, এলাকার ঘাট বিধায় ইজারা নিয়েছি। কিন্তু কোন লাভের মুখ দেখছি না। নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জের চেয়ে বাড়তি টাকা নেয়ার কোন সঠিক কারন জানাতে পারেনি ওই ছাত্রলীগ নেতা। অপরদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অপুর নামে ইজারা থাকলেও সরেজমিনে অলিখিতভাবে অংশিদার রয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন। এব্যাপারে স্থানীয়রা জানায়, একদিন অপুর লোকজনে চার্জ আদায় করলে পরেরদিন সুজন কিংবা তার লোকজনে চার্জ আদায় করে। এভাবে পর্যায়ক্রমে টারমিনালের চার্জ আদায়ই বলে দিচ্ছে অলিখিতভাবে সুজনের অংশীদারিত্বের কথা। এদিকে ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে ভুক্তভোগী ট্রাকচালকরা জানায়, ভেদুরিয়া টার্মিনালে পার্কিং চার্জের নামে চালকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৯০০ টাকা চাঁদা আদায় করে। এছাড়া সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭৫ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও বিআইডব্লিউটিএর অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় ইজারাদাররা ২০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে। লাহারহাট ভেদুরিয়া রুটের ফেরিঘাট টারমিনালের অতিরিক্ত চার্জ আদায় বন্ধ করতে সচেতন মহল বিআইডব্লিউটি’র চেয়ারম্যান’র হস্তক্ষেপ কামনা করছে।