পুলিশ ও প্রশাসনের অসৌজন্যমূলক আচরনে জনমনে ক্ষোভ

কামরুন নাহার | ১৯:৪৪, মার্চ ২৮ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক।। করোনাভাইরাস রোধে চলাচল সীমিত রাখার সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের অসৌজন্যমূলক আচরনে জনমনে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। প্রশাসন রাস্তায় কাউকে পেলে কান ধরে ওঠবস করানো, লাঠিপেটা করা, মাটিতে গড়াতে বাধ্য করার মতো বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা গেছে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের জনগনের সাথে ঔদ্ধার্তপূর্ন আচরন করে শাস্তির প্রয়োগ করছে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলা হয়েছিল, মানুষ যাতে ঘরে থাকে, সে ব্যাপারে তাঁরা যেন উদ্বুদ্ধ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তারপরও ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের ক্যাডার বাহিনী। সূত্র মতে, গতকাল নগরীর দপদপিয়া সেতুর ঢালে বরিশাল সদর উপজেলা ইউএনও মো: মোশারফ হোসেনের সামনে দুইজন সাংবাদিক কর্মীকে বেধড়ক লাঠিপেঠা করে পুলিশের একাধিক সদস্য। আহত সাংবাদকর্মীরা একাধিকবার তাদের পরিচয়, কার্ড ও সাথে ক্যামেরা দেখালেও নিস্তার মেলেনি পুলিশের লাঠিপেটা থেকে। সম্পূর্ন ঘটনাটি গাড়িতে বসে অবলোকন করেন ইউএনও। যেখানে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে কার্ড ব্যবহার করার কথা বলেছেন সেখানে কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেন তাদের লাঠিপেঠা করা হলো জানতে চাইলে ইউএনও জানান, ব্যাপারটি আমি খেয়াল করেনি। তবে এ ধরনের অনাকাক্ষিত ঘটনার জন্য আমি দু:খিত। পরবর্তী অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধু সাংবাদিক নয়, কাউকে যেন লাঠিপেটা না করে সে বিষয়ে তাদের সতর্ক করা হবে। তিনি আরো বলেন, কাউকে লাঠিপেটা করার কোন নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়নি। বুজের মাধ্যমে ঘরে থাকতে উদ্ধুত্ত করতে বলা হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশের অভিযোগ সেলে জানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এদিকে শুধু বরিশালেই নয়, বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে সাধারন জনগন। গতকাল যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চিনেটোলা বাজারে দুই বৃদ্ধ ভ্যানচালককে কান ধরে ওঠবস করান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা। ব্যাপারটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন। এছাড়া চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক ও অধীনস্থ কর্মকর্তারা মধ্যরাতে একজন সাংবাদিকদের বেধড়ক পেটানো ও জেলে ভরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় হয়। পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে প্রশাসন। এ ধরনের প্রেক্ষাপটে পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. জাবেদ পাটোয়ারী দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদের সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিনয়ী,সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, শাররীক নির্যাতন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সে অন্যায় করেছে, করোনো সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কাউকে মারার জন্য বলা হয়নি। সাংবাদিক নির্যাতনে বিষয়ে তদন্ত সাপক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।