সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে জিহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:০৬, ফেব্রুয়ারি ০৭ ২০২২ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার মো. ফারুক হোসেন ও রেহানা আক্তার দম্পতির ছেলে জিহাদ হাসান। খর্বাকৃতির এ যুবক গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২০-২১ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে রোববার বিকেলে ভর্তি হন তিনি। প্রতিবন্ধকতা নিয়ে পৃথিবীতে আসেন তিনি। আর দশটা মানুষের মতো স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারতেন না। খেলাধুলা করতে গেলে ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পেরে পড়ে যেতেন। স্কুলে সহপাঠীরা বাঁকা চোখে তাকাত, কিন্তু এ সবের কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি তার এগিয়ে যাওয়ায়। বলছি পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার মো. ফারুক হোসেন ও রেহানা আক্তার দম্পতির ছেলে জিহাদ হাসানের কথা। খর্বাকৃতির এ যুবক গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২০-২১ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে রোববার বিকেলে ভর্তি হন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে জিপিএ-৪.৮৭ নিয়ে এসএসসি এবং ২০২০ সালে জিপিএ-৪.২৫ নিয়ে এইচএসসি পাস করেন জিহাদ। জীবনসংগ্রাম নিয়ে জিহাদ হাসান  বলেন, ‘জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভালো করে হাঁটতে পারি না। কোথাও খেলাধুলা করার সময় শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পেরে পড়ে যেতাম৷ ‘এ ছাড়া পড়াশোনা করার ক্ষেত্রেও সহপাঠীসহ অনেকে আড় দৃষ্টিতে তাকাত, তবে কখনও লজ্জা পাইনি; বরং মনে সাহস নিয়ে পড়ালেখায় আরও বেশি গতি বাড়িয়েছি।’ পরিবারের সমর্থন নিয়ে তিনি বলেন, ‘পড়ালেখা চালিয়ে যেতে বাবা-মা ও বড় বোন সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তাদের জন্যই মনোবল না হারিয়ে রাত জেগে পড়েছি, যার ফলে এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আমার পরিবার খুব খুশি।’ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জিহাদ বলেন, ‘আমি এখন আরও বেশি সময় নিয়ে পড়ালেখা করব। এরপর ভালো ফলাফল নিয়ে অনার্স পাস করব। বিসিএস ক্যাডার হয়ে জনগণের সেবা করতে চাই। আশা করছি এই আশাও আমার পূর্ণ হবে।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘শত প্রতিকূলতার মধ্যে কীভাবে পড়াশোনা করতে হয়, তার দৃষ্টান্ত জিহাদ। সে মনোবল নিয়ে পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ফলাফল করবে, এমনটাই প্রত্যাশা করি।’