পাস হওয়া ইসি বিল নতুন মোড়কে পুরনো জিনিস: জাপা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২০:১৪, জানুয়ারি ২৯ ২০২২ মিনিট

রিপোর্ট দেশজনপদ॥ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিলকে নতুন মোড়কে পুরনো জিনিস হিসেবে আখ্যা দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো সংশয় থাকলে তা জনগণের সামনে তুলে ধরা প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তাদের দায়িত্ব বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, এর বাইরে তাদের কোনো করণীয় নেই। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ পাসের প্রস্তাব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এ নিয়ে শনিবার দলটির চেয়ারম্যান তার বনানী রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। নির্বাচন কমিশন গঠন হলে এর অধীনে নির্বাচনে যাবেন কিনা প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন গঠন হয়নি। নির্বাচন কমিশন কী ধরনের মানুষকে নিয়ে গঠিত হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করে আমরা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেব।’ সরকার কী ধরনের নির্বাচন কমিশন গঠন করবে সেদিকে আপনারা তাকিয়ে থাকবেন বলছেন, এতেই বিরোধী দলের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংসদে সংবিধান অনুযায়ী বিরোধী দলের দায়িত্ব, সেখানে শুধু ত্রুটিগুলো তুলে ধরা। কিন্তু সংসদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত কীভাবে হবে, কতটুকু হবে সেগুলো একক ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নিয়োজিত। উনি যেভাবে, যতটুকু চাইবেন সেভাবে সংসদে পাস করবেন। এটা জেনেই আমরা বিরোধী দল করছি। উনারা যা চাইবেন না, তার বাইরে কিছু করার স্কোপ নেই। সাংবিধানিক পন্থায় নেই।’ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করেছিলাম আগামীতে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে তার জন্য সংবিধানের বিধান অনুসারে একটি আইন করা দরকার। আইনের উদ্দেশ্য হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে কমিশন গঠন। সে অনুযায়ী যোগ্য ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের বাছাই করার মাপকাঠি ও পন্থা সুনির্দিষ্ট করা।’ পাস হওয়া বিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার বিষয়ে উল্লেখ নেই জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব ছিল এ বিষয়েও একটি আইন থাকা প্রয়োজন। যে আইনে নির্বাচনী কাজে কোনো কর্মচারী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পালন না করলে নির্বাচন কমিশন নিজেই যেন শাস্তির ব্যবস্থা নিতে পারে। ‘যথোপযুক্ত নির্বাচন কমিশন গঠন করলেই তা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ও সহযোগিতা দেয়া হয়।’ অনুসন্ধান কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নাম প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, আইনে সার্চ কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে। সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে বলা হয়নি। তাছাড়া মাত্র ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে নাম প্রস্তাব করার বিধানটি বেশি তাড়াহুড়ো বলে মনে হয়। ‘আমরা মনে করি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেয়ার আগে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নাম জনগণের সামনে প্রকাশ করার প্রয়োজন। জনগনের মতামত বিবেচনায় এনে সংশোধনের সুযোগের ব্যবস্থা রাখলে বাছাইয়ের সার্বিক বিষয়টি স্বচ্ছতা পেত।’ জিএম কাদের বলেন, ‘এ আইন করার ফলে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আগের তুলনায় কোনো উন্নতি হবে বলে মনে হয় না। আগের মতোই পরোক্ষভাবে প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে। নতুন করা আইনটি পুরাতন পদ্ধতিকে একটি আইনগত কাঠামোতে এনে আইনসম্মত করা হচ্ছে।’ সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।