বরিশালে বাড়ছে করোনার হার, নেই জনসচেতনতা
নিজস্ব প্রতিবেদক॥ বরিশালে করোনা শনাক্তের হার ৮ দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী। ২০ ডিসেম্বরের পর থেকে করোনা শনাক্তের হার ছিল এক শতাংশের নিচে। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে করোনা শনাক্তের হার ৩ শতাংশ অতিক্রম করেছে। যা দিন দিন আরও বাড়ছে, এ ব্যাপারে নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ। সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হলেও বরিশালবাসীর মধ্যে নেই কোনো উদ্বেগ।
নগরীতে মাস্ক না পরে জনসমাগমের মধ্যে অবাধে চলাচল করছে অধিকাংশ নগরবাসী। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। তাই জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ড প্রদানের দাবি জানিয়েছেন সচেতন নগরবাসী।
বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহীন খান জানিয়েছেন, বিভাগে ৮ দিন ধরে করোনা শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বরের পর থেকে করোনা শনাক্তের হার ছিল এক শতাংশের নিচে। যা ১ জানুয়ারি থেকে করোনা শনাক্তের হার ৩ শতাংশ অতিক্রম করেছে। গত ১ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ছিল ৩ দশমিক ৭৭, ২ জানুয়ারি ৩ দশমিক ১৩, ৩ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৭০, ৪ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৫৫, ৫ জানুয়ারি ৭ দশমিক ৩৪, ৬ জানুয়ারি ৩ দশমিক ২৩, ৭ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৮২ এবং ৮ জানুয়ারি শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ৬ জেলায় ৭৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা আক্রান্ত কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
গত ১৮ দিনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন বিশ্লেষণে করোনা শনাক্তের হার ৮ দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী দেখা গেছে। পুরো বিশ্বের পাশাপাশি দেশেও করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। বরিশাল বিভাগেও সবাইকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। তবে বরিশালবাসীর মধ্যে করোনা সংক্রমণ এড়াতে কোনো সচেতনতা লক্ষ করা যায়নি। নগরজুড়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় অধিকাংশ নগরবাসী জনসমাগম এলাকায়ও অবাধে মাস্কবিহীন অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এতে দিন দিন করোনা সংক্রমণের হার আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতন নগরবাসী।
পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক মানওয়ারুল ইসলাম অলি জানান, প্রশাসন নগরীতে অভিযান পরিচালনা করলেই অধিকাংশ নগরবাসী সচেতন হয়ে যান। তখন কাউকে মাস্ক না পরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় না। অভিযান বন্ধ থাকলেই ফের মাস্ক না পরে চলাচল করতে দেখা যায় নগরবাসীকে। তাই নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দণ্ড প্রদানের পাশাপাশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
নগরীর বাসিন্দা রাফাত হোসেন জানান, নগরীর অধিকাংশ বাসিন্দা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না। হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ মাস্ক পরলে সুফল আসবে না। সবাইকে মাস্ক পরার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নগরীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর অভিযানের দাবি তার। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশ পেলে সেই মোতাবেক কার্যক্রম চালানো হবে।