আগৈলঝাড়ায় ৮ বছর ধরে শিকলবন্দি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:৪০, ডিসেম্বর ২১ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক॥ আগৈলঝাড়ায় সম্পত্তির লোভে ৮ বছর ধরে বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে তোতাকে (৫৪) শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাই মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে। তার দাবি, জাহাঙ্গীর মানসিক ভারসাম্যহীন, তাই তাকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনা উপজেলা সমাজসেবা কর্তকর্তা সুশান্ত বালা জানতে পেরে রোববার রাতে শিকলবন্দি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে তোতাকে মুক্ত করে দেন। জাহাঙ্গীর উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের আলতাব হোসেনের বড় ছেলে। ৮ বছর ধরে শিকলবন্দি হয়ে কাটছে জাহাঙ্গীরের জীবন। যে বয়সে তার চাকরি করার কথা, সংসারের হাল ধরার কথা, সেই বয়ছে তার পায়ে ঝুলে ছিল শিকলবন্দি দুটি তালা। সরজমিনে দেখা গেছে, তোতা মিয়ার ডান পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এর আগে বাঁ পায়ে শিকল ছিল। সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হলে ডান পায়ে শিকল দেওয়া হয়। এভাবে পা বদলিয়ে দিনের পর দিন তাকে আটকে রাখা হয়। বাড়িতে স্থানীয় লোকজন যাওয়ার পর তোতা তাদের পা জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘ভাই আমি পাগল না। আমাকে বিনা কারণে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে।’ শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিও জানান তোতা। স্থানীয় ফারুক হাওলাদার জানান, তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় জাহাঙ্গীর হোসেন তোতা। তাকে বিয়ে করালেও পরবর্তী সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে স্ত্রী তাকে ১০ বছর আগে ছেড়ে চলে যান। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, ছোট ভাই রাংতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানিক মিয়ার অবহেলার কারণে ৮ বছর ধরে জাহাঙ্গীর হোসেন শিকলবন্দি। শুধু সম্পত্তি নিজের নামে করতে একমাত্র বড় ভাইকে কোনো সুচিকিৎসা না করিয়ে শিকলবন্দি করেছেন ছোট ভাই। জাহাঙ্গীর হোসেনের মা হাওয়া বেগম বলেন, ২৮ বছর ধরে মানসিক সমস্যা। ৮ বছর আগে বাড়ির পাশের সেলিম মল্লিকের স্ত্রী মাকসুদা বেগমকে মারধর করার কারণে সেই থেকেই তোতাকে শিকল দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। জাহাঙ্গীরের একমাত্র ছোট ভাই মানিক মিয়া জানান, মানসিক সমস্যার কারণেই ভাইকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমি আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছি।