কলাপাড়া প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রমন হওয়া নিয়ে স্থানীয়রা আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের করোনা সংক্রমন থেকে মুক্ত রাখতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ কোচিং সেন্টার গুলো ৩১মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি, বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি আদালতের কার্যক্রমও চলছে সতর্কতার সাথে। এরপরও অধিকাংশ বিদেশ ফেরতরা স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশিত হোম কোয়ারেন্টাইন না মেনে বাড়ির বাইরে অবাধ বিচরন করায় জনমনে এদের নিয়ে ক্রমশ: ছড়িয়ে পড়ছে আতংক। জানা যায়, জেলায় গত ৩ মাসে বিদেশ থেকে ৮ হাজার ৩৪৪ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে থাকা ২ হাজার ৫৬৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা গেছে। সুস্থতার জন্য হোম কোয়ারেন্টাইন মুক্ত হয়েছেন ৪০২ জন। বিদেশ ফেরত বাকী ৫ হাজার ৭৭৭ জনের অবস্থান সনাক্ত কওে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন। কলাপাড়া প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরব, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, সুইডেন, মিশর, কাতার, ভারত, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস থেকে ১৩৩ জন নাগরিক মার্চ মাস পর্যন্ত কলাপাড়ায় ফিরেছেন। তন্মধ্যে ৮৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বাকীদের অবস্থান সনাক্ত করে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন। এদিকে জেলায় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে পটুয়াখালী শহর ও সদর উপজেলার মৌকরণ থেকে দুই জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর এ প্রেরণের ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইন না মানায় বিদেশ ফেরত তিন জনকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি করোনা সেল ও একটি করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে বলে গতকাল রবিবার পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, কলাপাড়ায় বিদেশ ফেরতরা স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা এড়িয়ে চায়ের ষ্টল, হাট-বাজার, অফিস পাড়া, মসজিদসহ জনসমাগম স্থলে অবাধে ঘুরে বেড়ানোয় স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এমনকি কয়েক প্রবাসী প্রশাসনের নির্দেশনা এড়িয়ে ফৌজদারী মামলায় আদালতে এসে জামিন নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আইনজীবী সূত্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস কলেজের পিছনে বসবাসরত প্রবাসী আব্বাস ভিয়েতনাম থেকে ১৭মার্চ দেশে ফিরে হোম কোয়ারেন্টাইন না মনে পরিবারের সাথে একত্রে বসবাস করছেন। এছাড়া তিনি বাড়ির বাইরে অবাধ বিচরন করায় স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামের ইটালি ফেরত রাসেল হাওলাদারকে গত শনিবার রাতে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল তার বাড়ীতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন মানার অনুরোধ জানিয়েছেন। কলাপাড়া থানার ওসি মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, কলাপাড়ায় ১৩৩ জন বিদেশ ফেরতদের তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে। এদের সকলের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি তার। কলাপাড়া ইউএনও মো: মুনিবুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমন রোধে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। বিদেশ ফেরতদের হোম কায়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে ভ্রাম্যমান আদালত সার্বক্ষনিক কাজ করছে। কোথাও কোন ব্যত্যয় হলে আইনের প্রয়োগ করা হচ্ছে। বিদেশ ফেরতরা নির্দেশনা না মানলে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।