এমপিকে প্রধান অতিথি না রাখায় অনুষ্ঠান বর্জন আ.লীগের

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৭:০৬, ডিসেম্বর ১৮ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বরগুনার তালতলী উপজেলায় বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে সূবর্ণজয়ন্তী পালন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি শপথ গ্রহণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। ব্যানারে স্থানীয় এমপিকে প্রধান অতিথি না রেখে ইউএনও নিজেই সভাপতি থাকায় অনুষ্ঠান বর্জন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তবে উপজেলা ছাত্রদলের দুই সাবেক সভাপতিকে ইউএনওর পাশে বসিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে ৫০ বছরের সূবর্ণজয়ন্তী পালন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। এ আয়োজনের আমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবিরকে বিশেষ অতিথি লেখা থাকলেও অনুষ্ঠানের ব্যানারে তাদের নাম ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হোসেন সভাপতি হিসেবে ব্যানার করা হয়। সকালের অনুষ্ঠানে এ ব্যানার ব্যবহার করেনি তাই দিনের সব অনুষ্ঠান শেষ করে উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর নাম প্রধান অতিথি হিসেবে ব্যানারে নেই- এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবিরকে বিশেষ অতিথি করা হয়নি। এটা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজ। নিন্দার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। অনুষ্ঠান বর্জন করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এছাড়াও সকালের অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসন দখল দিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে ইউএনওর আত্মীয় ও স্ত্রীর। আসন না পেয়ে ফিরে আসেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মু. তৌফিকউজ্জামান তনু, তালতলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। এদিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সব সহযোগী সংগঠন অনুষ্ঠান বর্জন করলেও তালতলী উপজেলা বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতি সাইফুল ইসলাম মামুন ও আতিকুর রহমান অসিমকে ইউএনও পাশের আসনে বসিয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ। তালতলী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মু. আ. মোতালিব বলেন, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের অবমূল্যায়ন করেন ইউএনও। এজন্য আমরাও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে চলে আসছি। তিনি আরও বলেন, সংসদ সদস্যের নাম না থাকার বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মু. তৌফিকউজ্জামান তনু বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে প্রধান অতিথি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ব্যানারে বিশেষ অতিথি না দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে তার নাম সভাপতি হিসেবে দেওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠান বর্জন করেন। কিছু ভিআইপি আসন নির্ধারিত রাখা হয়েছে। সেখানে ইউএনওর স্ত্রী আত্মীয়রা দখল করে রাখেন তাই আসন না পেয়ে চলে আসছি। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠান বর্জন করলেও ছাত্রদলের দুই সাবেক সভাপতিকে পাশে বসিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, ব্যানার না দেখে সকালের সব অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় এসেছি। বিকালের অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগেই সংবাদ পাই যে ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে প্রধান অতিথি হিসেবে রাখা হয়নি। তাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সবাই মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আসন না পেয়ে ফিরে আসার বিষয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) কাওসার হোসেন বলেন, অনুষ্ঠান বর্জনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্যের নাম থাকার কথা ছিল কিন্তু তিনি অনুপস্থিত থাকায় কোনো অতিথির নাম লেখা ছিল না। তাই সরকারের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বর্জন করলে এতে কিছু যায় আসে না, এটা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। তারা যদি মনে করেন রাষ্ট্রের বাহিরের কেউ তাহলে বর্জনের প্রশ্ন আসতে পারে। কে আমার পাশে বসে অনুষ্ঠান দেখেছে তা আমি কীভাবে বলব। আমি কাউকে চিনি না। তালতলীতে বিএনপি বলতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাককে চিনি। জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাই কোনো মন্তব্য নয়।