বরিশালে পদে পদে ভোগান্তির শিকার সাধারণ রোগীরা

কামরুন নাহার | ০০:৩৯, মার্চ ২১ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের আতংক ছড়িয়ে পরায় বেশ ভোগান্তির মধ্যে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে সর্দি, কাশি এবং জ্বরের রোগীদের। করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের প্রথম উপসর্গ এই রোগগুলো হওয়ায় তাদেরকে চিকিৎসা দিতেও অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষরা বলছেন সর্দি, জ্বর বা কাশির রোগীদের আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখানে দায়িত্ব অবহেলার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ রয়েছে, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেনারেল হাসপাতালে সর্দি, কাশি এবং জ্বরের রোগীদের থেকে সকলেই দূরত্ব বজায় রাখছেন এবং তাদের চিকিৎসাও ঠিকভাবে করা হচ্ছে না। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা হাফিজুর রহমান জানায়, কয়েকদিন ধরে সর্দি ও কাশি হচ্ছে। তাই ডাক্তার দেখাতে এসেছি। কিন্তু এখানের সকলেই আমিসহ যারা এখানে এই রোগের জন্য এসেছে তাদেরকে এড়িয়ে চলছে। চিকিৎসা দিলেও তা শুধু নামে মাত্র। আরেক রোগী হাফসা সুলতানা বলে, এখানে সর্দি বা কাশি নিয়ে যারাই আসছে তাদেরকেই করোনা রোগী ভাবা হচ্ছে। আর সেভাবেই ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে। সকলে আমাদের কাছ থেকে দূরে দূরে রয়েছে। চিকিৎসারও নাজেহাল অবস্থা। জানা গেছে, বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রতিদিন জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে কয়েকশ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকে বহির্বিভাগ থেকে। একই খবর পাওয়া গেছে পটুয়াখালী থেকেও। সেখানকার জেনারেল হাসপাতালেও সর্দি, কাশি ও জ্বরের রোগীদের ঠিকমত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। যে কারণে ভোগান্তি ও বিপাকের মধ্যে পরেছে অনেকে। সেখানকার রোগীরা মনে করছেন এমনটা হলে হাসপাতালে আসারই কোনো দরকার পরছে না। বরগুনা ও ঝালকাঠি থেকেও মিলেছে একই খবর। এদিকে বরিশাল নগরীতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক সর্দি, জ্বর বা কাশি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন না তাদের চেম্বারে। এমন খবর ছড়িয়েছে পুরো বরিশালজুড়েই। এতে আরো বিপাকে পড়েছে এই রোগীরা। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, সর্দি, কাশি বা জ্বরের রোগ নিয়ে যারা হাসপাতালে আসেন তাদের জন্য আলাদা কর্নার করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন। তাছাড়া বর্তমানে সর্দি বা কাশি হওয়া রোগীদের সবাই ভয় পাচ্ছে তাই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতালের উপ পরিচালক ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক জানায়, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা সকলকেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আলাদাভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে সর্দি, কাশি ও জ্বরের রোগীদের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলে, করোনা রোগীদের প্রথম পর্যায়ে সর্দি, কাশি বা জ্বর হয়ে থাকে। সে কারণে সকলেই এইসব রোগীদের কাছ থেকে দূরে থাকছে এবং আতংকিত। তাই পুরো বরিশাল বিভাগে এই সকল রোগীদের যাতে সুষ্ঠভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সকল হাসপাতালে এই রোগীদের আলাদাভাবে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং এটা দেওয়ায় হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। আমরা সকলকে সতর্ক করছি।