বরিশালে ৬১০ অগ্নিকাণ্ডে ৭ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:৩২, নভেম্বর ১৭ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ অগ্নি দুর্ঘটনা আমাদের দেশে হরহামেশাই হচ্ছে। প্রতি বছর আগুনের কারণে আমাদের দেশে বিপুল অর্থের ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমনি ঝরে যাচ্ছে মূল্যবান প্রাণ। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো বরিশালের জেলা-উপজেলা ও গ্রামে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বিগত এক বছরে বরিশালে ৬১০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৭ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার ৪৮ শতাংশ ঘটেছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে। এরপরই রয়েছে গ্যাসের চুলার মাধ্যমে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ড। এমনকি সিগারেটের ফেলে দেওয়া অংশের সূত্র ধরে ঘটেছে ৬৮টি দুর্ঘটনা। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বিভাগীয় কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বরিশাল জেলায় ৬১০টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ ৭ কোটি ১০ লাখ ৪ হাজার ৫শ টাকা। এছাড়া ৪৮ কোটি ৮৫ লাখ ২৪ হাজার টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুর্ঘটনার মধ্যে বৈদ্যুতিক গোলযোগে ২৯১টি, চুলা (ইলেকট্রিক, গ্যাসের, মাটির ইত্যাদি) থেকে ১৫০টি, বিড়ি-সিগারেটের জলন্ত টুকরা থেকে ৬৮টি, উত্তপ্ত ছাই বা জ্বালানি থেকে ৮টি, খোলা বাতির ব্যবহার থেকে ৯টি, ছোটদের আগুন নিয়ে খেলা থেকে ১৪টি, যন্ত্রাংশের ঘর্ষণজনিত ২টি, শত্রুতামূলক একটি, বজ পাত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে একটি, স্বতঃফুর্ত প্রজ্জ্বলন থেকে ২টি, চিমনির স্ফুলিঙ্গ থেকে একটি, স্থির বিদ্যুৎ থেকে ২টি, বিস্ফোরণ (সিলিন্ডার, বয়লার ইত্যাদি) থেকে ৭টি, যানবাহনের দুর্ঘটনাজনিত কারণে ১৭টি। এছাড়া আরও ৪১টি অগ্নিকাণ্ডের কারণ শনাক্ত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। এসব দুর্ঘটনায় একজনের প্রাণহানি হয়েছে। সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন ৮ জন। আর উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫ জন আহত হন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বিভাগের উপপরিচালক এবিএম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি বছর সবার উচিত গ্যাসের লাইন, চুলা, সিলিন্ডার এবং বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা। দরকার হলে বদলে ফেলা। সাধারণত গ্যাসের চুলা এবং বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটছে। এজন্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও তার ইত্যাদি ব্যবহারের সময় পণ্যমান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। বাড়িঘর ও কলকারখানায় অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ড কমিয়ে আনতে হলে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণেরও দরকার আছে। অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সবাইকে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ করা উচিত। তাছাড়া কোথাও আগুন লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে জানালেও প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। অগ্নিকাণ্ড কখন ঘটবে সে বিষয়টি পূর্ব থেকে অনুমান করা যায় না। তবে সচেতন হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব।