নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে বছরান্তে বাড়ছে সফলতা অর্জনের ঝুলি। মেট্রোপলিটন প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরের মাথায় প্রায় নাই এর তালিকায় চলে গেছে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা।
অনেকটাই কমেছে মাদকের বিস্তার। শুধুমাত্র চলতি বছরের দশ মাসে ২ কোটি ১১ লাখ টাকার অধিক মুল্যের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে বিএমপি পুলিশ।
আটক করেছে মাদকের সাথে জড়িত এক হাজার ১২৬ জনকে। এছাড়া মেট্রোপলিটন এলাকার চার থানায় বিভিন্ন ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে এক হাজার ৪২৭ টি। এরমধ্যে মাদক মামলাই দায়ের হয়েছে ৭৬২টি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এই সফলতা প্রো-একটিভ পুলিশিং ব্যবস্থা গ্রহণই এই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পিছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে বলে দাবি নগর পুলিশ প্রধান বিএমপি কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান- বিপিএম (বার)।
জানা গেছে, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা পায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)। প্রতিষ্ঠার পর পুলিশের তৎপরতা ও জনগণের সচেতনতার কারণে দিন দিন অপরাধের প্রবনতা কমতে শুরু করে। পুলিশের প্রো-একটিভ নানা পদক্ষেপের কারণে সামাজিকভাবে অনেক অপরাধ নিস্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। ফলে কমতে শুরু করেছে মামলার সংখ্যাও।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত বরিশাল মেট্রোপলিটন আওতাধীন কোতয়ালী, কাউনিয়া, এয়ারপোর্ট ও বন্দর থানায় বিভিন্ন ঘটনায় ১ হাজার ৪২৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে শুধুমাত্র মাদকের মামলায় রয়েছে ৭৬২টি। এর বাইরে ৮টি হত্যা, ১টি ডাকাতি ও ১৪৫টি চুরি মামলা।
তবে নগর পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, তবে গত বছরের চেয়ে কমে এসেছে এই মামলার হার। ২০২০ সালে এক বছরে এই চার থানায় মামলা দায়ের হয়েছে ১ হাজার ৫৩৩টি।
এরমধ্যে মাদকের মামলা ছিল ৬৮৪ টি। আর হত্যা মামলা ২০টি ও চুরির মামলা ছিল ১৮২ টি। তবে গত বছরে মেট্রোপলিটনের কোন থানায় ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়নি।
এছাড়া মেট্রোপলিটন পুলিশের মাদক নিয়ন্ত্রনেও ব্যাপক সফলতাও রয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত চার থানা ও ডিবি পুলিশ ২ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৬৩৬ টাকার মাদক উদ্ধার করেছে।
মাদকের সাথে জড়িত ১ হাজার ১২৬ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে, ২৭ হাজার ৬০৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, প্রায় ৮৫ কেজি গাজা, ৯২৮ পিস মরফিন ইনজেকশন, ২৩৭ পিস ফেন্সিডিল ও ১৬ গ্রাম হেরোইন।
এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান-বিপিএম (বার) বলেন, পুলিশের তৎপরতার পাশাপাশি থানাগুলোতে ওপেন হাউস ডে, কমিউনিটি, বিট ও স্কুল পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকসহ অন্যান্য অপরাধ প্রবনতা আগের চেয়ে অনেকাংশে কমে গেছে। এছাড়া ৯৯৯ নম্বরে কল করে তাৎক্ষনিক অপরাধের কথা পুলিশের নজরে আনতে পারায় অপরাধ দ্রুত নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে।
অন্যদিকে আপরাধ প্রতিরোধে প্রো-একটিভ পুলিশিং ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এতে করে অপরাধ দানা বাঁধার আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এরপরও নগরীতে চুরিসহ অন্যান্য অপরাধ রোধে সরকারিভাবে বিভিন্ন সড়কের মোড়ে ২৫ টি সিসি ক্যামারা স্থাপন করা হয়েছে। আর ব্যাক্তি পর্যায় রয়েছে আরো প্রায় ৫ হাজার ক্যামারা। যা অপরাধ কমিয়ে আনাসহ অপরাধীদের খুঁজে বের করতে সহায়ক হচ্ছে।
কমিশনার আরো বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছে আজকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকির মাধ্যমে তা আরো জোরালো করা হবে।