রিপোর্ট দেশ জনপদ ॥ সিঙ্গাপুরের প্রবাসজীবনে থাকার সময় ফিলিপাইনের নারী জিন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকার সঙ্গে পরিচয় হয় ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্থা গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস মিয়ার। সেই থেকে তাঁদের প্রেম। পরে পরিণয়।
জিন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকা মাইক প্রতীক নিয়ে বাধাকানাই ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে চার হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সারা দেশে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে জয়লাভ করেন জিন ক্যাটামিন।
২০১০ সালে সুদূর ফিলিপাইনে গিয়ে জিন ক্যাটামিনাকে বিয়ে করে দবরদস্থায় আনেন জুলহাস। জাহিদুল ইসলাম নামের এক পুত্রসন্তান আছে এই দম্পতির।
জুলহাস ১৯৯৮ সালে সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে জিন ক্যাটামিনের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তিনি। দীর্ঘদিন পর দেশে চলে আসেন তিনি এবং জিন ক্যাটামিনও তাঁর দেশে চলে যান, কিন্তু মুঠোফোনে তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে।
পরে জিন ক্যাটামিন তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ২০১০ সালে ফিলিপাইন যান জুলহাস। সেখানেই তাঁদের বিয়ে হয়। পরে স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন জুলহাস। ধর্মান্তরিত হয়ে জিন ক্যাটামিন ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন।
জিন ক্যাটামিন প্রেট্রিয়াকা থেকে তাঁর নাম হয় জেসমিন আক্তার। এক পর্যায়ে জেসমিন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। ১১ বছর তাঁদের দাম্পত্যজীবন।
এলাকাবাসী জানায়, বাংলাদেশে এসে স্বামী, পরিবার ও আশপাশের মানুষকে আপন করে নিয়েছেন এই বিদেশিনী। ভোটারদের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি।
ভাঙা ভাঙা বাংলা ও বাংলা-ইংরেজি মিশেলে জিন তাঁর নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। প্রচারের সময় তাঁর ইংরেজি কথাগুলো বাংলায় বুঝিয়ে দিতেন স্বামী জুলহাস।
দবরদস্থার ভোটার আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বিদেশি নারী হলেও তাঁর কথাবর্তায় আমাদের গ্রামের সবাই মুগ্ধ। গ্রামের মানুষের ভালোবাসায় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।’
জুলহাস মিয়া জানান, একজন বিদেশিনীর সঙ্গে সংসার টেকে কি না, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু সবার ভালোবাসায় সেই আশঙ্কা দূর হয়েছে। জেসমিনও সবাইকে আপন করে নিয়েছেন। শিশুদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে বোঝা যেত, তাঁর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি রয়েছে।
জিন ক্যাটামিন বলেন, ‘জুলহাসের জন্যই বাংলাদেশে এসেছি আমি। জুলহাসের পরিবার ও গ্রামের মানুষের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। আমার প্রতি তাদের ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের মাধ্যমে।’