বিষখালী’র দু’পাড়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস!

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:১৩, নভেম্বর ০২ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিষখালী নদীর দু’পাড়ের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। ফেরির ন্যায় সংগত যৌক্তিক দাবী নিয়ে তাঁদের দীর্ঘ দু’যুগের আন্দোলন, মানববন্ধন ও প্রত্যাশার স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিচ্ছে বিষখালী নদীতে ফেরি স্থাপন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন। এ সংবাদ পাওয়ার পরপরই বিষখালী নদীর পূর্বপাড় বরগুনার বেতাগী উপজেলা এবং পশ্চিমপাড় ঝালকাঠী’র কাঠালিয়া উপজেলা। এ দু’পাড়ের মানুষের মাধ্যে বইছে বাঁধভাঙা আনন্দের বন্যা। এ যেন হঠাৎ করে আরেক ঈদ এসেছে। জানা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলার পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী-কচুয়া মহাসড়কে বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া ফেরী স্থাপনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগ গতকাল সোমবার (১ নভেম্বর) উপসচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রশাসনিক অনুমোদন নিশ্চিত হওয়া গেছে। জানা গেছে, গত ৬ অক্টোবর ২০২১ খ্রি. তারিখ সকাল ১০টায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মালেক’র সভাপতিত্বে এক টেকনিক্যাল কমিটির সভায় বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া ফেরী স্থাপনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে ৪ অক্টোবর এ সংক্রান্ত সভা আহবান করেন এ বিভাগের উপসচিব ফাহমিদা হক খান। এরপর বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, ঝালকাঠী-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন, বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির ও শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন’র প্রচেষ্টায় পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ-বেতাগী-কচুয়া মহাসড়কের বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে বিষখালী নদীর উপর ফেরী স্থাপন প্রকল্প প্রশাসনিক অনুমোদনের কার্যক্রমের কাজ করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রশাসনিক অনুমোদনের আগে বাংলাদেশ আভ্যন্তরিন নৌ-পরিরহন কর্তৃপক্ষ থেকে বিষখালী নদীর গভীরতা নিরুপনের কাজ সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে বিষখালী নদীর গভীরতা নিরুপনের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ফেরী প্লানিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস ২৬ আগষ্ট ২০২১ তারিখ বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌ-পরিরহন কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফী বিভাগের পরিচালকের বরাবরে চিঠি প্রেরণ করেন। এদিকে বিষখালী নদীর দু’পাড়ের মানুষের সর্বস্তরের জনগনের দাবীর পরিপেক্ষিতে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির ও ঝালকাঠী’র কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন’র যৌথ প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে বেতাগী-কচুয়া ফেরী স্থাপন কার্যক্রম শুরু হয়। ১৩ জানুয়ারী ২০১৬ তারিখ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগরে নন-গেজেটেড সংস্থাপন এনটিআর অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মাদ রফিকুল করিম সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে মতামত প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ২৮ আগষ্ট ২০১৮ তারিখ উক্ত চিঠির ইতিবাচক জবাব দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রেরণ করেন। পরে ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখ বিষখালী নদীর উপর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরী স্থাপনের সম্ভব্যতা যাচাই প্রতিবেদন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান স্বাক্ষরিত পত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঢাকার সড়ক ভবনের ফেলী প্লানিং সার্কেলসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করেন। এ সম্পর্কে কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানায়,’ ২০১৪ সাল থেকে বিষখালী নদীতে বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে স্থাপনে ন্যায় সংগত দাবী করে আসছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে একাধিকবার চিঠি প্রেরণ করছি। আজ এর বাস্তবে রূপ নিয়েছে।’ এ বিষয় বেতাগী পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম গোলাম কবির বলেন,’ বেতাগীবাসীর প্রাণের দাবী ছিল বিষখালী নদীর বেতাগী-কচুয়া পয়েন্টে ফেরি স্থাপন। ফেরি স্থাপনে প্রশাসনিক অনুমোদন উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ জনপদ আরেক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।’