সহস্রাধিক পরিবারকে দেয়া হবে পাকা ঘর

কামরুন নাহার | ০০:৩৯, মার্চ ১৭ ২০২০ মিনিট

মির্জা রিমন ॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশাল সদরের সহস্রাধিক পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের নিয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ক শ্রেণীর সুবিধাভোগীদের ৫শ ৬টি ঘর দেয়া হবে এবং খ শ্রেণীর সুবিধাভোগীদের ৮শ ৭৬টি ঘর দেয়া হবে। এরমধ্যে ক শ্রেণীর হলো, যাদের ভুমি আছে ঘর নেই এবং খ শ্রেণী হলো যাদের ভুমি ও ঘর নেই। প্রতিটি বাড়ির সম্ভাব্য নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে এ কর্মসূচিতে মোট ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। এক তলাবিশিষ্ট দুই বেডের এই পাকা বাড়িতে থাকবে ড্রয়িংরুম, বারান্দা, টয়লেট, কিচেনসহ একটি পরিবারের বসবাসের উপযোগী বাসগৃহ। এনিয়ে বরিশাল সদর এসিল্যান্ড মো: মেহেদি হাসান বলে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে দরিদ্র এ মানুষের মধ্যে ঘরগুলো প্রধানমন্ত্রী উপহার দিবেন। আর সেলক্ষ্যে আমরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বরদের মাধ্যমে তালিকা তৈরী করেছি দিন রাত খেটে। এখন এ তালিকা ইউএনও দপ্তরে পাঠানো হয়েছে এরপর চুড়ান্ত তালিকা করে ঘরগুলো বরাদ্ধ দেয়া হবে ইউনিয়ন পর্যায়ে। বরিশাল সদর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো: কামরুল বলে, ঘরগুলো দেয়ার জন্য আমাদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে এখন তালিকাগুলো চুড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এরপর নির্দেশনামতো তালিকা অনুযায়ী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু কিভাবে এ তালিকা তৈরী করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে আগে থেকেই গৃহহীন ও ভুমিহীন উভয়েরই তালিকা আছে এখন সেই তালিকাগুলো হালনাগাদ করার পাশাপাশি আরো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইউনিয়নগুলোর ওয়ার্ড পর্যায়ে ইউপি সদস্য, স্কুল শিক্ষক, মসজিদের ইমাম এবং তহশিলদারদের সহযোগীতা নেয়া হয়েছে প্রকৃত ভুমি ও গৃহহীনদের খুঁজে বের করতে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রির কার্যালয় থেকে আগেও ঘর দেয়া হয়েছে এবং এসময় আমাদের কাছে অনেক ভুমি ও গৃহহীনদের তালিকা ছিলো যাদেরকে ঘর দেয়া সম্ভব হয়নি বরাদ্ধ কম থাকায়। এখন সেই তালিকাও কাজে লাগানো হবে যাতে প্রকৃতরা কেউ বাদ না পরে। এদিকে বরিশাল সদর ৬নং জাগুয়া ইউনিয়রে চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরী বলে, মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে স্পেশাল(বিশেষ) কোন ঘর বরাদ্দ নেই। তবে আগে যে বরাদ্ধ ছিলো সেগুলোরই কাজ চলমান। চেয়ারম্যান আরো বলে, উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্ধ পেয়েছি ৮টি এবং এমপির কোঠায় ২/১টি থাকতে পারে তবে তা আমার জানা নেই। অপরদিকে কাশিপুর ইউনিয়নের সচিব মো: আব্দুর করিম বলে, ঘরের জন্য একটি তালিকা দেয়া হয়েছে উপজেলা দপ্তরে। তবে এটি মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে নেয়া হয়েছে কিনা জানিনা। চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ বলে, ঘরের তালিকা পাঠানো হয়েছে তবে মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে নতুন কোন বরাদ্দ আসেনি। সায়েস্তাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলে, তালিকা পাঠানো হয়েছে এখন পর্যন্ত কিছু জানায়নি। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোশারফ হোসেন বলে, প্রয়োজনে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের (স্কাউট, গার্লস গাইড, সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক) সহায়তা নিয়ে তালিকা যাচাই করে প্রেরণ করা হবে। এছাড়াও বাসগৃহ নির্মাণে নির্দেশিকা পেয়েছি। কর্মসূচির নকশা, ইস্টিমেট ও ডিজাইন করার জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, গুচ্ছগ্র্রাম প্রকল্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের প্রকৌশলীদের নিয়ে ইতিমধ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দেশে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫১৪টি গৃহহীন পরিবার রয়েছে। এ ছাড়া ২ লাখ ২৬ হাজার ভূমিহীন পরিবার রয়েছে।এই ৬ লাখ ৮ হাজার ৫১৪টি পরিবারকেই পাকাবাড়ি করে দেয়া হবে।