মুলাদীতে ফোন দিলেই মিলছে ইলিশ!

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:২১, অক্টোবর ২৪ ২০২১ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের মুলাদীতে জেলেদের ফোন দিলেই মিলছে ইলিশ। প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা, বিক্রয় ও পরিবহণ নিষিদ্ধ হওয়ায় জেলেরা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মাছ বিক্রি করছেন। ক্রেতাদের কাছে মাছ পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। এজন্য জেলেরা পরিবারের নারী ও শিশুদের ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের অভিযানের ট্রলার চালকের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে জেলেরা নিবিঘ্নে মাছ ধরছেন বলে জানান স্থানীয়রা। জানা গেছে, ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকে জেলেরা নানা কৌশলে মাছ ধরে যাচ্ছেন। জেল-জরিমানা করেও তাদের থামাতে পারেনি প্রশাসন। নৌকায় অস্থায়ী ইঞ্জিন বসিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া নদীতে জাল ফেলে খালের মোহনায় নৌকা লুকিয়ে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। তালিকাভুক্ত জেলেদের পাশাপাশি মৌসুমি জেলেরা যুক্ত হওয়ায় নদীতে শত শত নৌকায় মাছ শিকার করতে দেখা যায়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার জেলে রয়েছে। কিন্তু ইলিশের প্রজনন মৌসুমে জেলের সংখ্যা এর তিনগুণেরও বেশি। নানা পেশার মানুষ অস্থায়ীভাবে ইলিশ শিকারে যুক্ত হন। জেলে ও ক্রেতারা সরকারি আইন মানলে ইলিশ শিকার বন্ধ হয়ে যেত। মৃধারহাট এলাকার জানে আলম জানান, ফোন দিলেই জেলেরা বাড়িতে মাছ পৌঁছে দেন। কিন্তু দাম একটু বেশি। তবে প্রশাসনের হাতে ধরার পড়ার ভয়ে অনেকেই এই পন্থা অবলম্বন করেন। এছাড়া মৃধারহাট, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট, চরমলিয়া মনির মল্লিকের আড়ত এলাকা, সফিপুর সোহেল সরদারের মাছের আড়ত এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হয়। চরমালিয়া গ্রামের কালাম দেওয়ান জানান, জেলেরা প্রতিনিয়ত কৌশল পাল্টে মাছ ধরেন। নদীতে জাল ফেলে খালি বোতলে বেঁধে ছেড়ে দেন। পরে এসে জাল উঠিয়ে নেন। চরাঞ্চলের প্রত্যেক জেলের বাড়িতে ২-৩টি করে ডিপফ্রিজ রয়েছে। এসব ফ্রিজ ভর্তি রয়েছে ইলিশে। এমনকি বরফ কিনে মাছ ফ্রিজিং করে মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছেন অনেকে। সফিপুর এলাকার জেলে জাকির হোসেন দাবি করেন, পুলিশের ট্রলারের মাঝির সঙ্গে অনেক জেলের সখ্যতা রয়েছে। তারা মোবাইলে জেলেদের কাছে অভিযানের কথা বলে দেয়। ফলে কিছু জেলে ধরা পড়লেও অনেকেই নিবিঘ্নে মাছ শিকার করছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুব্রত গোস্বামী বলেন, মোবাইলে কলের মাধ্যমে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় হলে তা ধরা অনেক কঠিন। প্রকাশ্যে কোথাও ইলিশ বিক্রির সংবাদ তিনি এখনো পাননি। বিভিন্ন এলাকায় আবারো অভিযান চালানো হবে। এছাড়া ট্রলার চালকদের সঙ্গে জেলেদের সখ্যতার বিষয়টি জানা নাই। তবে প্রমাণ পেলে ট্রলার চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।